spot_img

আফগানিস্তানে মানবাধিকারের ওপর নির্ভর করছে তালিবানের বৈধতা : জাতিসঙ্ঘ

অবশ্যই পরুন

মঙ্গলবার জাতিসঙ্ঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে আফগানিস্তানে মানবাধিকারের একমাগত ‘বিপজ্জনক অবক্ষয়’-এর আঘাত সইছেন নারী ও মেয়েরা। তারা এ সঙ্কটকে দেশটির তালিবান নেতাদের ‘ইচ্ছাকৃত ব্যর্থতা’ বলে অভিহিত করেছেন।

আফগানিস্তানে জাতিসঙ্ঘের সহযোগিতা মিশন বা ইউএনএএমএ-এর প্রধান রোজা ও তুনবায়েভা ২১ আগস্ট সাবেক ইবদ্রোহী তালিবানের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন প্রসঙ্গে বলেন, ‘কর্তৃত্বের সাথে আসে দায়িত্ব।’

তিনি বলেন, ‘জাতিসঙ্ঘের অধীনে আফগান জনগণের বৈধ প্রতিনিধি হবার যে দাবি করছে বর্তমান কর্তৃপক্ষ তার সাথে থাকতে হবে আমাদের অভিন্ন নীতি ও মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখার সত্যিকারের প্রচেষ্টা।’

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের সাথে সম্পৃক্ত ইউএনএএমএ-এর প্রকাশিত বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে তালিবানের মানবাধিকারের রেকর্ডে বিশেষত দেখা যাচ্ছে, আফগান নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে তাদের নিয়ম মতো বৈষম্যের চিহ্ন।

কোনো দেশ দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি লাভে ব্যর্থ তালিবান সরকার আফগান নারীদের প্রাত্যহিক ও প্রকাশ্য জীবনের প্রায় সব কিছু থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মেয়েদের ষষ্ঠ শ্রেণির বেশি শিক্ষা লাভ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বেশিভাগ কর্মস্থলে নারীদের নিয়োগ দেয়ার অনুমতি নেই। কেবল ব্যতিক্রম হচ্ছে স্বাস্থ্য, পুলিশ ও অভিবাসন দফতরগুলো। সেখানে পুরুষ অভিভাবক ছাড়া স্থলপথে বা বিমানে যাত্রাও নারীদের জন্য নিষিদ্ধ।

এসব বিধিনিষেধের উৎস হচ্ছে আড়ালে থাকা তালিবানের শীর্ষ নেতা, হাবাতুল্লাহ আখুনজাদার গত তিন বছর ধরে কট্টরবাদী ইসলামি আইন বা শারিয়ার ব্যাখ্যার ওপর জারি করা নির্দেশাবলী।

আজকের বিবৃতি তালিবানকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ঘোষণাপত্রকে আফগানিস্তান ও সমর্থন জানিয়েছিল।

আফগানিস্তানে মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসঙ্ঘের প্রতিনিধি ফিওনা ফ্রেজার বলেন, ‘যদি আফগানদের, বিশেষত নারী ও শিশুদের, অধিকার অব্যাহতভাবে নাকচ করা হয় তাহলে তা হবে আফগানিস্তানে যারা বসবাস করছেন তাদের কল্যাণ ও সুরক্ষা প্রদান করতে স্পষ্ট ও ইচ্ছাকৃত ব্যর্থতা।

তালিবান নেতারা নারীদের ওপর ঢালাও নিষেধাজ্ঞা পাল্টানোর ব্যাপারে জাতিসঙ্ঘের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক কর্তৃক আহ্বানগুলোকে এ বলে অবজ্ঞা করেছে যে তাদের শাসন শারিয়ার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।

আফগানিস্তানের কার্যত কর্তৃপক্ষ জাতিসঙ্ঘে তাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব চেয়েছে কিন্তু নারীদের ওপর তাদের বিধিনিষেধের কারণে জাতিসঙ্ঘ বারবার তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

এ মাসে আরো আগের দিকে আফগান গণস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আখুনজাদার নতুন ফতোয়ার কথা জানিয়ে হঠাৎ করেই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেয় গোটা দেশে নারী শিক্ষার্থীদের ভর্তি বন্ধ করতে। এই পদক্ষেপ মেয়েদের উচ্চশিক্ষা অর্জনের শেষ সুযোগ বন্ধ করে দিলো।

এই নির্দেশ বিশ্বব্যাপী সমালোচনার ঝড় তুলেছে এবং অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করে নেয়ার আহ্ব্ন জানানো হয়েছে।

বিধিনিষেধে আরো বলা হয়েছে যে এই নির্দেশের কারণে লাখ লাখ নারী ওই দেশে নারী নার্স ও ধাত্রীর অনুপস্থিতি অনুভব করবেন যেখানে তালিবান নারীদের চিকিৎসায় পুরুষ চিকিৎসকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

জাতিসঙ্ঘ সতর্ক করে দিয়েছে যে সর্বসাম্প্রতিক এ নিষেধাজ্ঞাটি দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে বেরিয়ে আসা দারিদ্র-পীড়িত আফগানিস্তান যে মানবিক সঙ্কট ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জের তা আরো বাড়িয়ে তুলবে।

সূত্র : ভিওএ

সর্বশেষ সংবাদ

চীন সফরে যাওয়ার ঘোষণা শ্রীলংকার প্রেসিডেন্টের

আগামী বছরের জানুয়ারিতে চীন সফরে যাবেন শ্রীলংকার নতুন প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে। দীর্ঘ বিলম্বিত বিদেশি ঋণ কাঠামো পুনর্বিন্যাস শেষে...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ