spot_img

পঞ্চদশ সংশোধনী একদলীয় শাসন কায়েমে প্রবর্তিত হয়েছিলো: অ্যাটর্নি জেনারেল

অবশ্যই পরুন

দেশের সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের প্রশ্নে হাইকোর্টে শুনানি চলছে। শুনানির পঞ্চম দিনে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল) মো. আসাদুজ্জামান তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে এই সংশোধনী আনার বিষয়ে বিস্তৃত বক্তব্য রেখেছেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল উল্লেখ করেন, পঞ্চদশ সংশোধনী প্রবর্তিত হয়েছিল মূলত একদলীয় শাসন কায়েম করতে এবং এই সংশোধনী দেশের গণতন্ত্র, মৌলিক মানবাধিকার, আইনের শাসন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করেছে। তিনি বলেন, ‘এই সংশোধনীর মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গণতন্ত্রের কবর রচনা করা হয়েছে এবং সংবিধানে কুঠারাঘাত করা হয়েছে।’

হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চে চলছে এই রুলের শুনানি। গতকাল (বুধবার) পঞ্চম দিনের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার ফলে সংবিধানে ছদ্মবেশী আইন (কালারেবল লেজিসলেশন) প্রবর্তন করা হয়েছে।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর প্রথম সংবিধান প্রণীত হওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘১৯৭৩ সালে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দেশ সামরিক শাসনের অধীনে ছিল। তখন স্বৈরশাসন উৎখাত করতে রাজপথে জীবন দিয়েছিলেন বহু শহীদ—ডা. মিলন, নূর হোসেন, রউফুন বসুনিয়া, সেলিম ও দেলোয়ারসহ অনেকেই। নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পতন ঘটে স্বৈরশাসনের।’

তিনি আরও বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, যা ১৯৯৬ সালে রাজনৈতিক ঐকমত্যের মাধ্যমে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, সে সময় একটি বড় ভূমিকা পালন করেছিল। তবে পঞ্চদশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে তা বাতিল করা হয়, যা একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে ছিল।’

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায়ে সুপ্রিম কোর্ট যে সিদ্ধান্ত দিয়েছিল, তা একে একে খণ্ডিত করা হয় এবং পঞ্চদশ সংশোধনী আনার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা বাতিল করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘তত্কালীন সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের যে ব্যাখ্যা দিয়েছে, তা আপিল বিভাগের রায়ের আলোকে দেয়া হয়নি। রায় ঘোষণার ১৬ মাস পরে প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসরের পর বিচারপতি খায়রুল হক লিখিত রায়ে বলেছিলেন, পরবর্তী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে কি হবে না, সেটি সংসদ নির্ধারণ করবে।’

এছাড়া, পঞ্চদশ সংশোধনীতে শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘জাতির পিতা’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রসঙ্গেও অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতা, তার অবদান অনস্বীকার্য। তবে আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘আমরা’ (উই) বলা হয়েছে, একক কোনো ব্যক্তির প্রাধান্য নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘একজন ব্যক্তি সব কিছু করেছে—এটা আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনার ধারণা নয়।’

অ্যাটর্নি জেনারেল দাবি করেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিকভাবে তাকে ব্যবহারের জন্য, যা মুক্তিযুদ্ধের কৃতিত্বকে ধ্বংস করার জন্য করা হয়েছিল।’

সর্বশেষ সংবাদ

কপ-২৯ সম্মেলন শেষে দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা

আজারবাইজানে কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলন শেষে দেশে ফিরেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাত ৮টা ৫...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ