ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উপকূলে শুরু হয়েছে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি। এতে স্বাভাবিকের চেয়ে নদ-নদীতে জোয়ারের পানি তিন থেকে পাঁচ ফুট বাড়ায় কুয়াকাটায় তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, দোকানপাট।
বাগেরহাটে স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও খাদ্যগুদাম হাঁটু পানির নিচে রয়েছে বলে জানা গেছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক মাইকিং করাসহ আশ্রয়কেন্দ্র এবং চিকিৎসক দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ভারতের উড়িষ্যা- পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে প্রচণ্ড গতিতে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। এর প্রভাবে উত্তাল বঙ্গোপসাগর। এরইমধ্যে ঝড়ের প্রভাব দেখা দিয়েছে দেশের দক্ষিণ- পশ্চিম উপকূলীয় জেলাগুলোতে। প্রচণ্ড ঝোড়ো হাওয়া, বৃষ্টি আর বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে সমুদ্র তীরে। জোয়ারের পানি ঢুকছে নিচু এলাকা এবং চরাঞ্চলে। এরই মধ্যে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বেশ কিছু এলাকা।
ভোলা:
ভোলার মনপুরায় বাধ ভেঙে এবং জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে ১৫টি গ্রাম। এতে চর কুকরি-মুকরি, ঢালচর, চর পাতলাসহ আশেপাশের ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে খাবার পানি সংকট।
মোংলা:
উপকূলীয় এলাকা মোংলায় মঙ্গলবার (২৫ মে) দুপুরের পর থেকেই দেখা দিয়েছে ঝোড়ো হাওয়া আর বৃষ্টিপাত। সেই সাথে সাগর ও পশুর চ্যানেল বেশ উত্তাল থাকায় সুন্দরবনর সংলগ্ন এলাকার সব জেলেকে দ্রুত নিরাপদে সরিয়ে নিতে মাইকিং করছে কোস্টগার্ড।
পটুয়াখালী:
পটুয়াখালীতে জোয়ারের তোড়ে কলাপাড়ার লালুয়া এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ ভেঙে ৯টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি ৮ হাজার মানুষ বলে জানা গেছে।
উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের তোড়ে কুয়াকাটা সৈকতের অর্ধশতাধিক অস্থায়ী দোকানপাট ভেসে গেছে।
এ অবস্থায় জানমাল রক্ষায় মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে সতর্কতামূলক মাইকিং করছে প্রশাসন।
বাগেরহাট:
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাগেরহাটের নদী-খালের পানি দ্রুত বাড়ছে। জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স উপজেলা খাদ্যগুদাম চত্বর হাঁটুপানির নিচে। এছাড়া শরণখোলার বলেশ্বর, মোরেলগঞ্জের পানগুছি, মোংলার পশুর, ভৈরব, দড়াটানাসহ সকল নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে আড়াই ফুট উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সাতক্ষীরা:
সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। প্রবল জোয়ারের পানি যাতে লোকালয়ে ঢুকতে না পারে সেজন্য শ্যামনগর উপজেলার বাতনীখালী, বুড়িগোয়ালিনী, দুর্গাবাটি এবং কৈখালী এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা।
খুলনা:
খুলানার দাকোপ উপজেলার বেশ কিছু জায়গায় বেড়িবাঁধ দুর্বল হয়ে পড়ায় পানির চাপ বাড়লে যেকোনো সময় লোকালয় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা স্থানীয়দের।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জোয়ারের পানি বেড়ে বরগুনার বড়ইতলা ফেরিঘাট তলিয়ে গেছে। এছাড়া পাথরঘাটার পদ্মা এলাকায় আধা কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে।
মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর পানি বেড়ে তলিয়ে গেছে ভোলার চর কুকমুকরি, চর নিজামসহ বিভিন্ন নিচু এলাকার বহু গ্রাম। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদী পাড়ের মানুষ।
এছাড়া কক্সবাজারের উপকূলীয় নদ নদীতে পানি বাড়ার পাশাপাশি উত্তাল রয়েছে সাগর।