চীনে অবিবাহিত পুরুষের সংখ্যা এখন ৩ কোটি (৩০ মিলিয়ন)। যা কোনো কোনো দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। বিপুলসংখ্যক এই বিবাহযোগ্য পাত্রের তুলনায় পাত্রীর সংখ্যা অনেক কম।
বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দেশটিতে লিঙ্গ বৈষম্য শিগগিরই কমার কোনো সুযোগ নেই। দেশটির সপ্তম জনসংখ্যা শুমারিতে এ তথ্য উঠে এসেছে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের (এসসিএমপি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন দীর্ঘদিন ধরে ছেলেশিশুদের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার বজায় রেখেছে এবং সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান সত্ত্বেও মেয়েশিশু জন্মের হার মাত্র কিছুটা বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ পরিস্থিতিতে লিঙ্গ বৈষম্যের সমস্যা খুব দ্রুত সমাধান হবে না।
এএনআই’র চীনের জাতীয় পরিসংখ্যার ব্যুরো এনবিএসের জনসংখ্যা শুমারি অনুযায়ী, গত বছর ১ কোটি ২০ লাখ (১২ মিলিয়ন) ছেলেশিশু জন্মগ্রহণ করেছে। এ সময় প্রতি ১০০ জন মেয়েশিশুর অনুপাতে ১১১ দশমিক ৩ জন ছেলেশিশু জন্ম নিয়েছে।
২০১০ সালে এই রেশিও ছিল ১১৮ দশমিক ১ থেকে ১০০ জন। চীনে নারীপ্রতি সন্তান জন্মদানের হার ১ দশমিক ৩ জন; যেখানে স্থিতিশীল জনসংখ্যার জন্য প্রতি নারীর সন্তান জন্মদানহার থাকা উচিত ২ দশমিক ১ জন।
স্টুয়ার্ট গিয়েটেন-বাসটেন বলেছেন, ‘সাধারনত চীনের পুরুষরা নিজেদের চেয়ে অনেক কম বয়সী মেয়ে বিয়ে করে। কিন্তু বয়স্ক জনসংখ্যার হার বেশি থাকার কারণে পরিস্থিতি আরও সঙ্গীন হয়ে উঠেছে।’
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, চীনা পরিবারগুলোয় মেয়ের তুলনায় ছেলেশিশু কামনা করা হয় বেশি।
বর্তমানের মেয়েশিশুরা যখন বিয়ের উপযুক্ত হবে তখন চীনে সম্ভাব্য কনের সংকট সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক জর্ন অ্যালপারম্যান। তিনি বলেন, ‘গত বছর যে ১২ মিলিয়ন শিশু জন্মগ্রহন করেছে তাদের মধ্যে ছয় লাখ ছেলে বড় হওয়ার পর বিয়ের জন্য মেয়ে খুঁজে পাবে না।’
চীনে ১৯৭৯ সালে এক-শিশু নীতি প্রণয়ন করা হয় এবং তা ২০১৬ সালে প্রত্যাহার করা হয়। এ সময়টিতে ছেলেশিশুর প্রত্যাশায় যৌন-নির্বাচিত গর্ভপাতের হারও বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন জনসংখ্যাতত্ত্ব বিষয়ক অধ্যাপক জিয়াং কোয়ানবাও।
নিম্নবিত্তের পুরুষদেও পক্ষে কনে খুঁজে পাওয়া আরও কঠিন উল্লেখ করে অধ্যাপক কাই ইয়ং উল্লেখ করেন, তারা শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভুগবে।