জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, সাংবাদিক রোজিনা হেনেস্তা ও তার বিরুদ্ধে মামলার প্রকৃত ঘটনা উন্মোচনের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। তদন্ত রিপোর্ট দাখিল না হওয়া পর্যন্ত আমরা রোজিনা ইসলামের জামিন দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, যারা সাংবাদিক রোজিনাকে হেনস্তা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। গণমাধ্যম কর্মীদের চাকরি সুরক্ষা এবং কাজের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করতে গণমাধ্যম কর্মীদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, দৈনিক প্রথম আলোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের সাথে যে বর্বরতা হয়েছে তা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। একজন অনুসন্ধানী প্রতিবেদক তথ্য সংগ্রহ করবেন এতে অপরাধের কিছু নেই। অনুসন্ধানী প্রতিবেদকদের জন্যই আমরা জানতে পারি বিভিন্ন দপ্তরে লুটপাটের খবর।
তিনি বলেন, করোনাকালে মাস্ক, পিপিই, হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ক্রয়ে যে দুর্নীতি হয়েছে তা অনুসন্ধানী প্রতিবেদকরাই জাতির সামনে তুলে ধরেছেন। আবার করোনা টিকা আমদানি করে একটি কোম্পানি ইতোমধ্যেই পঞ্চাশ কোটি টাকা লোপাট করেছে। বর্তমানে টিকা আমদানিতে কি হচ্ছে আমরা জানিনা। রোজিনা ইসলাম তাঁর পেশার স্বার্থেই তথ্য সংগ্রহ করেছে। জাতিকে জানাতে এবং দেশের স্বার্থেই সে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তথ্য সংগ্রহ কখনো চুরি হতে পারেনা।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, অফিসিয়াল সিক্রেসী অ্যাক্ট হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ কালো আইন। ১৯২৩ সালে বৃটিশ সরকার তাদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে নিবর্তনমূলক এই আইনটি পাশ করে। স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এমন কালো আইন জনস্বার্থ বিরোধী। বর্তমানে তথ্য অধিকার আইনটিও উপনিবেশিক ধারাবাহিকতা বজায় রেখে অর্থাৎ সরকার এবং জনগণ রাজা ও প্রজা এ ধারণাটিকে লালন করা হচ্ছে। আমরা এর ঘোর বিরোধীতা করছি। তথ্য অধিকার আইনকে যত দ্রুত সম্ভব সংশোধন করার দাবি জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে জাপা মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, রোজিনা ইসলামকে যেভাবে হেনেস্তা করা হয়েছে তা স্বাধীনতার চেতনা পরিপন্থী। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি মানুষের বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতার জন্য। কিন্তু আজ দেশে গণতন্ত্রহীনতার কারণে, মানুষ কথা বলতে পারছেনা। গণমাধ্যম কর্মীরা সত্য প্রকাশ করতে পারছেনা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই। গণমাধ্যমের যেসকল কর্মী সত্য প্রকাশে এগিয়ে আসছে তাদের বিরুদ্ধে অবর্ণনীয় নির্যাতন নেমে আসছে। রোজিনা ইসলামের উপর যে হামলা হয়েছে তা সভ্য সমাজে মেনে নেয়া যায়না।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের সাথে যে অবিচার করা হয়েছে তা সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে আজ সকলস্তরের মানুষ এক হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেও একজন নারী। আমরা বিশ্বাস করি বিযয়টি তিনি সরাসরি হস্তক্ষেপ করে দ্রুত রোজিনা ইসলামের মুক্তির ব্যবস্থা করবেন।