ফিলিস্তিনের নিরীহ জনগণের ওপর নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এ নিয়ে টানা ৮দিনের মতো দখলদার বাহিনীর হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০০ ছাড়িয়েছে। গাজায় ইসরাইলের সর্বাত্মক সন্ত্রাসী হামলার মধ্যেই দেশটিকে আরও অস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে প্রায় ৭৩.৫ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন।
অন্যদিকে ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপ বন্ধে গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল হামাসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, ফিলিস্তিনের হামলা থেকে বাঁচতে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে।
ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের ভয়াবহ হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। বাইডেন মানবাধিকার রক্ষার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ডেমোক্র্যাটরা।
সমালোচনা শুরু হয়েছে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে অব্যাহতভাবে সমর্থন নিয়েও। এর মধ্যেই আবার ইসরাইলকে ব্যাপক অস্ত্র-সরঞ্জাম সরবরাহ করতে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের বেশকিছু আইনপ্রণেতা।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, ইসরাইলের কাছে নতুন করে অস্ত্র বিক্রির বিষয়টি মার্কিন কংগ্রেসকে জানানো হয় চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে (৫ মে)।
গত সপ্তাহ থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের তীব্র বিমান হামলা শুরু হওয়ার প্রায় এক সপ্তাহের মাথায় রোববার ওই অস্ত্রবিক্রির প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় বাইডেন প্রশাসন।
এদিনই গাজায় হামলার বিষয়ে ইসরাইলকে সমর্থন জানিয়ে বাইডেন বলেন, ‘ইসরাইলের নিজেকে সুরক্ষার অধিকার রয়েছে।’
ওয়াশিংটনের এই অবস্থানকে এর আগেও মার্কিন কংগ্রেসের বেশির ভাগ আইনপ্রণেতাই সমর্থন করেছে। কিন্তু এই অব্যাহত সমর্থন নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের নতুন প্রজন্মের আইনপ্রণেতারা। এমনকি বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতা প্রস্তাবিত অস্ত্র বিক্রয় প্রস্তাব ও সময়ের ব্যাপারে আরও জানতে চাইছেন।
টানা আট দিন ধরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বিমান ও কামান হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। এসব হামলায় ৫৮ শিশুসহ ২০০ মানুষ নিহত হয়েছেন।
চলমান এ সহিংসতা থামাতে রোববার (১৬ মে) জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিল বৈঠকে বসেছিল। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাত বন্ধের আহ্বান সংবলিত ঘোষণা দেওয়ার লক্ষ্যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের তৃতীয় বৈঠকটিও ব্যর্থ হয়েছে। এর আগে রুদ্ধদ্বার দুটি বৈঠকও ব্যর্থ হয়। সর্বশেষ বৈঠকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় বিভিন্ন ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে মানুষকে জীবিত ও মৃত উদ্ধারে ইসরায়েলের সঙ্গে সাময়িক অনুমতির চুক্তিতেও পৌঁছাতে পারেনি নিরাপত্তা পরিষদ।