ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) মানেই অর্থের ঝনঝনানি। কাড়ি কাড়ি টাকা দিয়ে দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের দলে ভেড়ায় ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। কেবল ক্রিকেটারদেরই নয়, ঘরোয়া টি-টোয়েন্টির জমজমাট এই আসর থেকে বিপুল অর্থ আয় হয় বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই)।
করোনার প্রকোপের মাঝেই আয়োজন করা এবারের আইপিএল থেকেও বড় অঙ্কের আয় হতো বিসিসিআইয়ের। এবারের আসর থেকে ৪ হাজার কোটি রুপি আয় হওয়ার কথা ছিল ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির। কিন্তু মাঝপথে আইপিএল স্থগিত হয়ে যাওয়ায় বিসিসিআইয়ের আয় অর্ধেকে নেমে আসতে পারে, হাতছাড়া হতে পারে মোটা অঙ্কের অর্থ।
এই অর্থশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা। নাম না প্রকাশ করার শর্তে তিনি বলেছেন, ‘মাঝপথে টুর্নামেন্ট স্থগিত হওয়ায় দুই-আড়াই হাজার কোটি রুপির মতো অর্থ ক্ষতি হবে আমাদের। আরও নির্দিষ্ট করে বলতে বললে, আমার মনে হয়, ২ হাজার ২০০ কোটি রুপির মতো হবে। সত্যিকারের ক্ষতি আরও বেশি হতে পারে। আপাতত এই অঙ্ক নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে।’
এবারের আইপিএল ৫২ দিনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, ম্যাচ ৬০টি। কিন্তু স্থগিতের আগে ২৯টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাকি ৩১টি ম্যাচ না হওয়ায় সম্প্রচার স্বত্ব থেকে সবচেয়ে বড় অঙ্কের অর্থ হাতছাড়া হবে বিসিসিআইয়ের। ৫ বছরের জন্য স্টার ইন্ডিয়ার সঙ্গে সাড়ে ১৬ হাজার কোটি রুপির চুক্তি আছে বিসিসিআইয়ের। প্রতি মৌসুমে যা দাঁড়ায় ৩ হাজার ২৭০ কোটি রুপির মতো।
আইপিএলের প্রতিটি ম্যাচের জন্য স্টার ইন্ডিয়া দিচ্ছে প্রায় সাড়ে ৫৪ কোটি রুপি। ২৯ ম্যাচেই এবারের আসর শেষ হয়ে গেলে অর্থের পরিমাণ কমে আসবে অনেক। ম্যাচগুলো না হলে স্টার ইন্ডিয়া বিসিসিআইকে দেবে ১ হাজার ৫৮০ কোটি রুপি। এখানেই বিসিসিআইয়ের গচ্ছা যাবে ১ হাজার ৭০০ কোটি রুপি।
আইপিএলের টাইটেল স্পন্সর ভিভোর সঙ্গে বিসিসিআইয়ের চুক্তি ৪৪০ কোটি রুপির। এটিও অর্ধেকে নেমে আসবে। সহযোগী অন্যান্য স্পন্সরদের কাছ থেকে প্রাপ্য ১২০ কোটি রুপিও একইভাবে অর্ধেকে নেমে আসবে। এর বাইরেও কিছু আয় হওয়ার কথা ছিল। সব মিলিয়ে দুই-আড়াই হাজার কোটি রুপি হাতছাড়া হতে পারে বিসিসিআইয়ের।
যদিও এখনই হাল ছাড়ছে না বিসিসিআই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আইপিএলর বাকি ম্যাচ আয়োজনে পরিকল্পনা সাজিয়ে যাচ্ছে তারা। এ নিয়ে বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘বিশ্বকাপের পর অক্টোবর-নভেম্বরে আইপিএলের বাকি ম্যাচগুলো করা যায় কিনা, ভেবে দেখছি আমরা। সবকিছু ঠিকঠাক এগোলে, আমরা বিশ্বকাপ ও আইপিএলের বাকি ম্যাচ, সব ভারতেই আয়োজন করতে চাই।’