spot_img

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ: ৫ কাঠা জমির বিনিময়ে আপসের চেষ্টা

অবশ্যই পরুন

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে গ্রাম্য সালিশে পাঁচ কাঠা জমির বিনিময়ে আপসের চেষ্টা।

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কুশঙ্গল ইউনিয়নে দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে শুক্রবার দিনভর দৌড়ঝাঁপ করেছে স্থানীয় একটি মহল। থানা এবং ইউনিয়ন পরিষদে ছোটাছুটির পর শেষ পর্যন্ত বিকেলে ধর্ষকের বাড়িতে স্থানীয় কিছু লোক সালিশে বসে। এ সময় সালিশদারদের পরামর্শে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর নামে পাঁচ কাঠা জমি লিখে দেয়ার সিদ্ধান্তে রাজী হয় ধর্ষক আল-আমিনের বাবা আ. রশিদ খান। এতেই ঘটনার রফাদফা হয়ে যায়।

সালিশ মিমাংসা বৈঠকে কুশঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের একজন সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার ও তার স্বামী এবং কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। তবে, তারা সবাই সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি স্বীকার করতে রাজি হননি।

এদিকে কুশঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, ‘টিপু তার ভাই দেলোয়ারকে নিয়ে শুক্রবার সকালে আমার কাছে এসে ঘটনা মিমাংসা করে দিতে বলে। আমি পরিষ্কার বলে দিয়েছি স্কুলছাত্রী ধর্ষণের সালিশ মিমাংসা এখানে হবে না। তোমরা থানার ওসি অথবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে যাও।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বেশ কয়েকজন ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, ‘রাত ১১টার দিকে ঘরের বাইরে থাকা বাথরুমে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হয় স্কুলছাত্রী। দীর্ঘ সময় সে ঘরে না ফেরায় ওই শিক্ষার্থীর বড় বোন তাকে খুঁজতে বাইরে বের হয়। বাথরুমে না পেয়ে বাড়ির লোকজন নিয়ে খুঁজতে বের হয়। মেয়েটিকে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে রাতেই পাশের বাড়ির আ. রশিদ খানের বাড়িতে গেলে তারাও তার ছেলে আল-আলিমনকে ঘরে না পেয়ে মোবাইলে ফোন দেয়। সে দীর্ঘ সময়েও ফোন রিসিভ করেনি। পরে ফজরের সময় আল আমিন বাড়িতে এসে বলে সে রাতে তার নানা বাড়িতে ছিলো।

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফরাজী বাড়ির সামনে জোড়া ব্রিজের রাস্তার পাশে অজ্ঞান অবস্থায় পরে থাকতে দেখে এলাকাবাসী মেয়েটিকে উদ্ধার করে। একই গ্রামের কবির হোসেন নামের এক ব্যক্তি জানান, সকালে অসুস্থ মেয়েটিকে ভ্যানে করে তার ভাই-বোন, ভগ্নিপতিকেসহ থানার দিকে নিয়ে যায়। তবে, নলছিটি থানার সেকেন্ড অফিসার মফিজুর রহমান জানান, ভিকটিম বা তাঁর পরিবারের কেউ থানায় আসেনি।

ধর্ষিতা স্কুলছাত্রী সুস্থ হওয়ার পর স্থানীয় সাংবাদিকদের জানায়, রাত ১১টার দিকে দরজা খুলে বাইরে বের হওয়ার পর তার চোখমুখ বেঁধে বাড়ির পিছনে খালের পাশে নিয়ে যায়। সেখানে আল আমিনের কন্ঠ শুনতে পায় বলে জানায় ওই ছাত্রী। আল আমিন তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে বলেও স্কুলছাত্রী।

নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী আহম্মেদ জানান, স্কুলশিক্ষার্থী ধর্ষণের কোনো অভিযোগ আমি পাইনি। আর গ্রাম্য সালিশ হয়েছে বলে আমার জানা নেই, কেউ আমাকে এ বিষয়ে অবহিত করেনি।

এ বিষয়ে জনাতে চাইলে নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুম্পা সিকদার বলেন, ‘এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। এমন ঘটনা গ্রাম্য সালিশে মিমাংসা করার কোনো সুযোগই নাই। আমাকে ইউপি চেয়ারম্যানও যদি জানাতো আমি ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ব্যবস্থা নিতাম।’

সর্বশেষ সংবাদ

সশস্ত্রবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা বাড়লো আরও ৬০ দিন

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ