অনুরাধা দোড্ডাবাল্লাপুর৷ পেশায় গবেষক৷ আবার জার্মানির নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়কও তিনি৷ শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ভাগ বসিয়েছেন লাসিথ মালিঙ্গা-রশিদ খানের রেকর্ডে৷ জার্মান সংবাদ সংস্থা ডয়চে ভেলের সঙ্গে তার বিশেষ কথোপকথনের চুম্বক অংশ এখানে তুলে ধরা হলো৷
ডয়চে ভেলে: অনু না রাধা, আপনার নাম আসলে কোনটি?
অনুরাধা: আসলে পুরোটা একসঙ্গে৷ কিন্তু ছোট করে অনেকে আমাকে অনু বলেন৷
বাসায় তাহলে অনু বলে ডাকে?
হ্যা, তাই৷ আনুষ্ঠানিকভাবে সবাই পুরো নামটিই বলেন৷ তবে আমার পরিচিত লোকেরা আমাকে অনু বলে ডাকেন৷
আচ্ছা৷ ক্রিকেটের সঙ্গে পরিচয় হলো কেমন করে?
ভারতে বড় হয়েছি৷ প্রতিবেশীদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছি৷ আমার বড় ভাই, দুই কাজিনসহ আমরা একই বিল্ডিংয়ে থাকতাম৷ তাই পাড়ায়, পার্কে অনেক ক্রিকেট খেলতাম৷ আর ক্রিকেট খেলুড়ে দেশে বড় হওয়া মানে হলো আপনি খেলাটি টিভিতে দেখছেন৷ আমার আগ্রহ তাই সবসময়ই ছিল৷ তবে ১২ বছর বয়সে আমি স্কুলের এক বন্ধুর মাধ্যমে ক্রিকেট প্রশিক্ষণ নেয়াও শুরু করি৷ সে তখনই ব্যাঙ্গালোরে রাজ্য ক্রিকেট খেলতো৷ এভাবেই আমি পেশাদার ক্রিকেটের সঙ্গে পরিচিত হই৷ এরপর থেকে প্রায় বিশ বছর পেরিয়েছে৷
গত আগষ্টে আপনারা অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে একটি সিরিজ খেলেন৷ সেখানে আপনি একটি রেকর্ড গড়েছেন৷ আপনি আপনার নাম লাসিথ মালিঙ্গা-রশিদ খানদের সঙ্গে লিখিয়েছেন৷ এই অভিজ্ঞতা সম্পর্কে একটু বলুন৷
আমাদের জন্য খুব ভালো একটা সিরিজ ছিল৷ অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে আমরা ৫-০ তে সিরিজ জিতেছি৷ আসলে মহামারির কারণে পাঁচ-ছয় মাস খেলা বন্ধ ছিল৷ তাই সবাই ক্রিকেট খেলার জন্য মুখিয়ে ছিলাম৷ আমরা খুব খুশি ছিলাম যে, অস্ট্রিয়া টুর্নামেন্টটি আয়োজন করেছে এবং আমাদের আমন্ত্রণ করেছে৷ এই সিরিজে আমরা বেশ ক’টি রেকর্ড গড়েছি৷ আমাদের ওপেনিং ব্যাটসম্যানরা তাদের সেরাটা খেলেছেন৷ আমি আশা করি তারা শিগগিরই এই রেকর্ডও ভাঙবেন৷ আমাদের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় এমা একটি ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন, যেটা জার্মানির প্রথম৷ জার্মানির প্রথম হ্যাটট্রিকটি করেন আনা৷ আমাদের বেশ কয়েকটি রেকর্ডের মধ্যে আমারটিও একটি৷ এটা একটু অদ্ভুত যে, এটা আন্তর্জাতিক বিশ্বরেকর্ড হয়ে গেছে৷ আমি তো প্রশংসায় ভাসছি৷
আপনি প্রথম উইকেট নিলেন, পরের বলে দ্বিতীয় উইকেট, তারপর তৃতীয় ও চতুর্থ৷ পরপর চার বলে চার উইকেট৷ উইকেটগুলো যখন নিচ্ছিলেন তখন আপনার মাথায় কী কাজ করছিল?
চাইছিলাম, যত দ্রুত যত বেশি উইকেট তুলে নেয়া যায়৷ প্রথম উইকেটটি ছিল স্লিপে ক্যাচ৷ জ্যানেট চমৎকারভাবে বলটি মুঠোবন্ধি করে৷ এরপরের তিনটি বোল্ড৷ আমি স্টাম্প টু স্টাম্প বল করে গেছি৷ আমি জানি না, ব্যাটসম্যানদের মাথায় কী চলছিল, তবে পরিকল্পনা কাজে লেগেছে৷ হ্যাটট্রিক বলটিতে আমি খুবই উচ্ছ্বসিত ছিলাম, কারণ, আগের দিনই আরেকটি হ্যাটট্রিক ছিল আমাদের, সেদিন করলাম আমি৷ চতুর্থ বলটির পর স্বাভাবিক উল্লাস করেছি, কারণ, তখন আসলে জানতাম না এটি একটি বিশ্বরেকর্ড৷
আপনি একজন মিডিয়াম পেস বোলার৷ কিন্তু সে সময় আপনি স্পিন করা শুরু করলেন৷ কেন?
চাইছিলাম পেস কমিয়ে উইকেট টু উইকেট বল করতে৷ ব্যাটারদের যেন শট খেলতে একটু বেশি শক্তি খরচ করতে হয়৷
২০১৭ সাল থেকে আপনি জার্মানির নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন৷ কেমন লাগছে?
অসাধারণ৷ আসলে এমন একটি চমৎকার দলের অধিনায়কত্ব কোনো জটিল কাজ না৷ আমি যদি অধিনায়ক না-ও হতাম, তারপরও এতটাই উপভোগ করতাম, যতটা এখন করছি৷ তবে বাড়তি দায়িত্ব তো অবশ্যই৷ আপনি ভবিষ্যৎ খেলোয়াড়দের কেমন করে মাঠ ও মাঠের বাইরে সহযোগিতা করতে পারেন তা ভাবছেন, আপনার অভিজ্ঞতা তাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন, তারাও খুব ভালোভাবে আপনাকে নিচ্ছে৷ সবমিলিয়ে ভালোই লাগছে৷
আপনি ভারতে ক্রিকেট খেলেছেন৷ এরপর ইংল্যান্ডে খেলেছেন৷ এখন জার্মানিতে খেলছেন৷ আপনার এই ক্রিকেটীয় সফর সম্পর্কে আমাদের বলুন৷
সফরটি আসলে ক্রিকেটের কারণে নয়, পড়াশোনার জন্য৷ আমি একজন বায়োমেডিকেল সায়েন্টিস্ট৷ আমি ২০০৮ সালে মাস্টার্স করতে ভারত থেকে যুক্তরাজ্যে আসি৷ ভারতে প্রায় এক দশক কর্ণাটক রাজ্যের হয়ে খেলেছি, অনূর্ধ ১৬, অনূর্ধ ১৯ ও মূল দলে৷ ক্রিকেট সবসময়ই আমার জীবনের অংশ ছিল৷ ইংল্যান্ডে কাউন্টিতে খেলেছি দুই মৌসুম৷ একটি স্থানীয় ক্লাবে খেলেছি, বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট খেলেছি৷ ২০১১ সালে পিএইচডি করতে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে আসি৷ ২০১৫ সালে তা শেষ করি৷ এ সময় আমি দেখলাম, এখানে মেয়েদের জাতীয় দল আছে, কয়েকটি ক্লাব আছে, ২০১৩ সালের কথা বলছি৷ ফ্রাঙ্কফুর্টে অবশ্য মেয়েদের কোনো ক্লাব ছিল না৷ তাই ছেলেদের সঙ্গে খেলেছি৷ সে বছরই আমি এখানকার জাতীয় দলে সুযোগ পাই৷ সাত বছর হলো আমি দলের সঙ্গে আছি৷
আপনি একজন সায়েন্টিস্ট৷ দলে বিভিন্ন পেশার সঙ্গে জড়িত খেলোয়াড়রা আছেন৷ কেউ ডাক্তার, কেউ শিক্ষার্থী বা স্কুল শিক্ষক৷ নানা পেশায় যুক্ত মেয়েদের নিয়ে দল গড়া কতটা কঠিন?
আমরা এই খেলাটা খেলি, কারণ, আমরা একে ভালবাসি৷ দিনশেষে ছয় থেকে আট ঘণ্টার ট্রেনিং বা ম্যাচ খেলা, পুরোটা সময় আমরা উপভোগ করতে চাই৷ সবারই এমন মানসিকতা৷ আমরা খেলোয়াড় হিসেবে আরো ভালো করতে চাই৷ তবে এটাও ঠিক, আমাদের অন্য পেশা বা কাজ রয়েছে৷ কেউ কেউ পরিবারের দেখাশুনাও করেন৷ আমরা কাজ ও খেলার সময়গুলো ভাগ করে নিই৷ সুখবর হলো, আমরা সপ্তাহান্তগুলোতে অনেক ক্রিকেট খেলি৷ আমরা যারা সপ্তাহের কার্যদিবসগুলোতে কাজ করি, তারা এই সুবিধাটি ভোগ করতে পারি৷ আপনার বয়স ১৫ কিংবা ৩৫ যতই হোক, আপনি কাজের বাইরে যতটা সময় পান তখন ক্রিকেটটা উপভোগ করেন৷ এটা একটা চমৎকার ভারসাম্য আমি বলবো৷
আপনি ভারসাম্যের কথা বলছিলেন৷ আমি নিশ্চিত যে, আপনি কেমন করে আপনার কাজ ও ক্রিকেটের মাঝে ভারসাম্য রক্ষা করেন, তা আপনার কাছে অনেকেই জানতে চেয়েছেন৷ কিন্তু আমি জানতে চাই, এই ভারসাম্যের কী দরকার? কেন একটাকে বেছে নিচ্ছেন না?
মানুষের তো নানা শখ থাকে৷ মানুষ তো কতকিছুই একসঙ্গে করতে চায়৷ আর আপনি যদি তা উপভোগ করেন, তাহলে আপনাকে একটা ছেড়ে আরেকটা কেন বেছে নিতে হবে? এমন তো না যে, কেউ আপনার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বলছেন, আপনাকে এটা করতে হবে, বা এটা করতে পারবেন না৷ এটা একটা মুক্ত বিশ্ব৷ আমি… আমরা পেশার পাশাপাশিই ক্রিকেট খেলছি আজকে অনেক বছর৷ এখনো আমি আমার দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দু’টোই ম্যানেজ করতে পারছি৷ যদি তা একটা সময় না করতে পারি, তখন দেখা যাবে৷
আপনার গবেষণা সম্পর্কে একটু বলুন৷ আপনার কাজের ক্ষেত্রে, কী ধরনের কাজ করছেন, কতটা সময় দিতে হয়, এসব৷
আমি একজন পোস্টডক্টরাল সায়েন্টিস্ট হিসেবে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটে নিয়োজিত আছি৷ এটি ফ্রাঙ্কফুর্টের উত্তরে বাড নাউহাইমে অবস্থিত৷ প্রায় পাঁচ বছর ধরে সেখানে আছি আমি৷ আমাদের গ্রুপটি শরীরের রক্তনালীর বৃদ্ধি ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করে৷ আমাদের গ্রুপে ৯-১০ জন আছেন৷ আমাদের গ্রুপ লিডারের ভাস্কুলার বায়োলজিতে বেশ নাম রয়েছে৷ তিনি পেশায় একজন কার্ডিওলজিস্ট৷ তিনি থাকায় গবেষণা ও প্র্যাকটিসের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা হচ্ছে৷
তার মানে বিজ্ঞান নিয়ে বেশ গভীরে কাজ করছেন আপনি৷ গবেষণা ও ক্রিকেট-এই দুই কাজের মধ্যে কোনো মিল খুঁজে পান?
ক্রিকেটে যেমন অনেক বছরের সাধনার পর আপনি এর ফল দেখতে পান, গবেষণার কাজও তেমন৷ আপনি এক-দুই বছর ধরে কোনো বিষয় নিয়ে লেগে আছেন, সেখানেও ফলাফল আসতে পারে, না-ও আসতে পারে৷ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হলো, আপনি এর থেকে কী শেখেন৷ যা ভালো কাজ করেনি তা ভুলে যেতে চাইবেন, যা ভালো কাজ করেছে তার জন্য গর্ব করবেন৷ টিমওয়ার্ক৷ আমরা গ্রুপে কাজ করি৷ আর আমি নিশ্চিত নই একক কোনো খেলায় এতটা আগ্রহ থাকতো কিনা আমার৷
আমাদের দর্শকদের অনেকে জানতে চান যে, আপনার প্রিয় ক্রিকেটার কে বা কারা?
মেগ ল্যানিং৷ অস্ট্রেলিয়ার মেয়েদের দলের অধিনায়ক৷ খুব ভালো ব্যাট করেন৷ আর এমন একটি দলের অধিনায়ক, যেখানে সবাই ম্যাচ উইনার৷ আমি মনে করি, তিনি অসাধারণ ক্যাপ্টেন৷ এলিস পেরি, অসাধারণ অলরাউন্ডার৷ ব্যাট ভালো করেন৷ সেরা ফিল্ডারদের একজন৷ যাদের খেলা দেখে বড় হয়েছি, খেলতে উৎসাহিত হয়েছি, তাদের মধ্যে অ্যালান ডোনাল্ড আমার খুব প্রিয়৷ তিনি আমার বোলিং আইকন ছিলেন৷ ৯০ দশকের সে সময়টায় দক্ষিণ আফ্রিকার আরো অনেক ক্রিকেটারের খেলা ভালো লাগতো, যেমন, জন্টি রোডস, তার মতো ফিল্ডার আজও তৈরি হয়নি৷ ছিলেন ল্যান্স ক্লুজনার৷ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শচীন টেন্ডুলকার, ভারতের অনেকের কাছে তিনি আজও ক্রিকেটের ঈশ্বর৷ দুঃখের বিষয়, তখন মেয়েদের ক্রিকেট টিভিতে দেখানো হত না৷ ভাল লাগত যদি আমি বলতে পারতাম, দশ বছর বয়সে আমি অমুক নারী ক্রিকেটারকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি৷ তবে পরিস্থিতি এখন ভিন্ন৷ অনেক তরুণ নারী ক্রিকেটারের সামনে এখন সে সুযোগ আছে৷
ভারতের ছেলেদের ক্রিকেট দলে তো অনেক তারকা৷ কাকে সবচেয়ে বেশি পছন্দ আপনার?
আমি যখন গবেষণার কাজ করছি না, তখন আমি জাতীয় নারী দলের সঙ্গে, বা স্থানীয় ক্লাবের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি৷ তাই খুব বেশি টিভি দেখা হয় না৷ অবশ্যই বিরাট কোহলি এ যুগের বড় তারকা৷ বোলারদের মধ্যে, খুব করে কারো কথা মনে পড়ছে না৷ আপাতত শুধু বিরাটের কথাই বলবো৷
এটা শোনার পর আমি কিছুটা সন্দিহান যে, আপনি কতটা অন্য দক্ষিণ এশীয় দলগুলো সম্পর্কে বলতে পারবেন৷ এই যেমন বাংলাদেশ, পাকিস্তান কিংবা শ্রীলঙ্কা৷ আপনি এসব দেশের ক্রিকেটারদের সম্পর্কে জানেন?
নারী ক্রিকেটারদের কথা বলছেন?
নারী কিংবা পুরুষ৷
আমি জানি যে, বাংলাদেশি নারী ক্রিকেট দল খুব ভালো করছে৷ কারো সাথে কথা বলার সুযোগ হয়নি কখনো৷ কর্ণাটকের একসময়কার অধিনায়ক মমতা মাবেন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের কোচ ছিলেন কিছুটা সময়ের জন্য৷ আমি তার কাছ থেকেও কিছুটা জেনেছি৷ বিশ্বকাপেও আমি তাদের কিছু ম্যাচ দেখেছি৷ ভালো দল তারা৷ শ্রীলঙ্কার চামারি আতাপাত্তু ভালো ব্যাটসম্যান৷ পাকিস্তানের সানা মিরকে সবাই চেনেন৷ ভালো অধিনায়ক ছিলেন৷ আমার ব্যাকগ্রাউন্ডের কারণে হয়ত ভারতকে বেশি অনুসরণ করি৷ বর্তমান দলের কয়েকজনকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনিও৷ তারা বেশ ভালো করছেন৷
এদের কয়েকজনের নাম বলুন, যাদের সঙ্গে আপনি খেলেছেন, চেনেন বা অনুসরণ করেন৷
বেদা কৃষ্ণমূর্তি, আমরা একই দলে খেলেছি৷ তিনি খুব ভালো ফিল্ডার, ভালো ব্যাটারও৷ বোলারদের মধ্যে পূনম যাদব খুব ভালো করছেন৷ ব্যাটারদের মধ্যে হারমান প্রীত৷ এছাড়া মিতালিকে সবাই চেনেন৷ আমি তার বিপক্ষে একবার খেলেছিলাম কর্ণাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশের মধ্যকার ম্যাচে৷ প্রচুর চার ছক্কা খেয়েছি তার হাতে সেদিন৷
জার্মান নারী ক্রিকেট প্রসঙ্গে আসি৷ এখন আপনারা বিশ্ব .ব্যাংকিংয়ে ২৬তম৷ পাঁচ বছর পর কোথায় দেখেন নিজেদের?
আগামী বছর ইউরোপিয়ান বাছাইপর্বে আমরা ওপরে থাকতে চাই৷ তাহলে আমরা বিশ্ব বাছাই পর্বে যেতে পারবো৷ আগামী পাঁচ থেকে সাত বছরে আমরা এসব বাছাই পর্বে শীর্ষ পর্যায়ে থাকতে চাই, যেন বিশ্বকাপ খেলতে পারি৷ সবকিছু ঠিকভাবেই এগুচ্ছে৷ আশা করি, সাত-আট বছর পর হয়ত দেখবেন বিশ্বকাপে জার্মানি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলছে৷
অনুরাধা যখন ক্রিকেট খেলছে না, ইনস্টিটিউটে কাজ করছে না, তখন কী করছে?
ঘোরাঘুরি! চেষ্টা করি এর জন্য সময় বের করতে৷ হয়ত আমাকে খুঁজে পাবেন কোনো পর্বত বেয়ে উঠছি আর সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের ছবি তুলছি৷ ক্যাম্পিং করি৷ ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি ভালো লাগে৷ জার্মানিতে অত করতে পারি না৷ কিন্তু ভারতে গেলে এটা আমার আইটিনেরারিতে থাকে৷
সবচেয়ে প্রিয় খাবার?
কঠিন প্রশ্ন৷ এটা সময়ে সময়ে বদলায়৷ তবে সবচেয়ে স্বস্তি বোধ করি ভাত আর দক্ষিণ ভারত স্টাইলের তরকারি৷ ইটালিয়ান পছন্দ করি৷ আমি ভেজিটারিয়ান৷ তাই অনেকগুলো অপশন বন্ধ৷ তবে খাবার নিয়ে আমি অত খুঁতখুঁতে নই৷ মোটামুটি খেতে ভালো এমন কিছু হলেই হলো৷
আপনি তো ব্যাঙ্গালোরের৷ তো ডোসা ভালো লাগে না?
ডোসা তো অবশ্যই৷ ভাত আর তরকারি রান্না করা সোজা, তাই এগুলোর কথা বলছিলাম৷ ডোসা বানাতে একটু কষ্ট হয়৷ কিন্তু কেউ যদি বানিয়ে টেবিলে দিয়ে রাখে, তাহলে ঠিকই খেয়ে নেবো৷
তো অনুরাধা, আপনার সাথে চমৎকার আড্ডা হলো৷ আপনার সম্পর্কে জানলাম৷ ক্রিকেট সম্পর্কে আপনার ভাবনা জানলাম৷ আর আপনি যেভাবে গবেষণা ও ক্রিকেটের মাঝে ভারসাম্য রক্ষা করে এগিয়ে যাচ্ছেন, তা কর্মজীবী নারীদের জন্য উদাহরণ৷ ডয়চে ভেলেকে সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ এবং আপনার ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা৷
আপনাকেও ধন্যবাদ৷ আপনার সঙ্গেও আলাপ করে ভালো লাগল৷ আশা করি ভবিষ্যতে আরো নারীরা জার্মানি বা যেখানেই হোক ক্রিকেট খেলবেন, কমবয়সিরা এগিয়ে আসবেন, খেলাটাকে এগিয়ে নেবেন৷ ধন্যবাদ৷
(ডয়েচ ভেলে থেকে)