spot_img

ইস্তাম্বুল খাল : এরদোগানের ভূ-রাজনৈতিক হাতিয়ার

অবশ্যই পরুন

ইস্তাম্বুল খাল নির্মাণের সূচনা সম্পর্কে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের সাম্প্রতিক মন্তব্যগুলো কৃষ্ণ সাগরের দেশগুলির পাশাপাশি ন্যাটো, ইইউ এবং চীনের মতো এ অঞ্চলে আগ্রহী আধিপত্যবাদী প্রধান খেলোয়াড়দের সামনে ভূ-রাজনৈতিক ও কৌশলগত চ্যালেঞ্জ হিসাবে উপনীত হয়েছে। এ মন্তব্য করেছেন জিওর্গে ব্র্যাতিয়ানু ইউরোপীয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ জিওপলিটিকাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের কর্ণধার কনস্তান্তিন কর্নানু। সোমবার রাশিয়ার বৃহত্তম সংবাদ সংস্থা তাস-এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন।

কর্নানু কলেন, ‘তুরস্ককে আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক খেলায় অন্তর্ভুক্ত করার অবিচ্ছিন্ন প্রয়াসে ইস্তাম্বুল খাল এরদোগান শাসনের অস্ত্রাগারে একটি উপকরণ হয়ে উঠবে।’ তিনি বলেন, ‘আঞ্চলিক সুরক্ষা কাঠামোতে ভারসাম্যহীনতা এড়াতে খালের আইনি অবস্থানের জন্য রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক আলোচনার প্রয়োজন হবে।’ রোমানিয়ান এ বিশেষজ্ঞ ভবিষ্যতের ঘটনাবলীর ৩টি সম্ভাব্য পরিস্থিতি বর্ণনা করেছেন। তার মতে, এই নতুন প্রকল্পে মন্ত্রাঁ কনভেনশনের রেজিম অফ দ্য স্ট্রেট্স সম্পর্কিত বিধান প্রয়োগ করা হলে তা তুরস্ককে তার ভূ-রাজনৈতিক ও প্রতিরক্ষা স্বার্থ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রধান খেলোয়াড়দের সাথে সরাসরি আলোচনার করে সুযোগ দেবে।

এদিকে, মন্ত্রাঁ কনভেনশন প্রত্যাখ্যান করা হলে, তা কৃষ্ণসাগর অঞ্চলকে সামরিকীকরণের দিকে পরিচালিত করবে। কারণ ন্যাটো নৌবাহিনী যেকোন সময় কৃষ্ণ সাগরে যাত্রা করতে সক্ষম হবে এবং ককেশীয় এবং ইউক্রেনীয় কৌশলগত অঞ্চলে রাশিয়ার পক্ষে সমস্যা তৈরি করবে। একই সাথে কনভেনশনের বিধান রক্ষা করে এবং ইস্তাম্বুল খালকে এর এখতিয়ারের বাইরে নিয়ে যাওয়া হলে, তা তুরস্ককে পূর্ব ভূমধ্যসাগর এবং কৃষ্ণ সাগরের পরিস্থিতি প্রভাবিত করতে সহায়তা করবে। ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাশাপাশি, রাশিয়া ও চীনও তুরস্কের ভূ-রাজনৈতিক ও প্রতিরক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করতে বাধ্য হবে বলে মনে করেন কর্নানু।

রাশিয়ার সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আঙ্কারার দোদুল্যমান অবস্থান এবং ইউক্রেনকে আধুনিক অস্ত্র দিয়ে সজ্জিত করার ক্ষেত্রে কিয়েভ সরকারের সাথে সহযোগিতা কর্নানুর মতে, এরদোগানের বর্ধিত কৃষ্ণসাগরীয় অঞ্চলে প্রতিরক্ষা বলয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসাবে তুরস্ককের রূপান্তরিত হওয়ার দক্ষতা প্রদর্শন করে। তিনি বলেন, ‘অতএব, একটি নতুন হুমকি উদ্ভ‚ত হচ্ছে যা, ক্রেমলিনে উদ্বেগ জাগাতে পারে এবং এই দাবি করে মতামতগুলোকে শক্তিশালী করতে পারে যে, পশ্চিম রাশিয়ান বিশ্বকে ঘিরে নতুন পরিকল্পনা তৈরি করছে। এই উদ্বেগগুলো অস্ত্রের লড়াই বাড়িয়ে দিতে পারে এবং আঞ্চলিক সুরক্ষা কাঠামোতে পরিবর্তন ঘটাতে পারে।’
উল্লেখ্য, ইস্তাম্বুল খাল প্রকল্পটি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান প্রথম ২০১১ সালে ঘোষণা করেছিলেন। পানিপথটির কৃষ্ণ সাগর এবং মারমার সাগরকে সংযুক্ত করে পশ্চিম ইস্তাম্বুলের একটি নতুন বড় নৌ ধমনীতে পরিণত হওয়ার কথা। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এরদোগান জোর দিয়ে বলেন যে, খালটি মন্ত্রাঁ কনভেনশনের আওতাভুক্ত হবে না। ১৯৩৬ সালে মন্ত্রাঁ শহরে গৃহীত এই কনভেনশনটি কেবলমাত্র বাণিজ্য জাহাজগুলোর জন্য বসফরাস এবং দারদানেল্স অঞ্চলের মধ্য দিয়ে একটি টোলবিহীন পথকে করে দিয়েছে। এদিকে, এটি অ-কৃষ্ণ সাগরীয় দেশগুলোর জন্য সামরিক জাহাজের জন্য শ্রেণিবিন্যাস এবং স্থানপরিবর্তন উল্লেখযোগ্যভাবে সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে। সূত্র : তাস।

সর্বশেষ সংবাদ

চিফ অফ স্টাফ হিসেবে সুসি ওয়াইলসকে নিয়োগ দিলেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে জয়ের পর তার চিফ অব স্টাফ হিসেবে সুসি ওয়াইলসকে নিয়োগ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনে জয়ের পর...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ