কিছুদিন আগেও পৃথিবীতে চারটি সাদা জিরাফ ছিলো। তিনটি কেনিয়ায়, একটি তানজানিয়ায়। কিন্তু চোরাশিকারিরা ২০২০ সালের মার্চে কেনিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব অংশে একটি সাদা মা জিরাফ ও তার বাচ্চাকে মেরে ফেলায় সেখানে এখন মাত্র একটি সাদা জিরাফ অবশিষ্ট রয়েছে।
২০১৭ সালে এই মা জিরাফ ও তার বাচ্চাকে কেনিয়ার ইশাকবিনি হিলোরা কনজারভেন্সিতে অন্য জিরাফদের সঙ্গে ঘুরতে দেখা যায়। তখন তাদের বেশ কিছু ছবি ও একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল।
কেনিয়ার অবশিষ্ট জিরাফটির সুরক্ষার জন্য ২০২০ সালের নভেম্বরে এর একটি শিংয়ে একটি ট্রেকিং ডিভাইস সংযুক্ত করা হয়েছে। এই ডিভাইসটির মাধ্যমে ঘণ্টায় ঘণ্টায় জিরাফটির অবস্থান সম্পর্কে আপডেট পাওয়া যাবে। ফলে চলাফেরা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে চোরাশিকারিদের হাত থেকে একে বাঁচানোর চেষ্টা করা সম্ভব হবে।
তানজানিয়ার তারাংগির ন্যাশনাল পার্কের রয়েছে অপর একটি সাদা জিরাফ। এটি দলের অন্য জিরাফদের সঙ্গে মিলেমিশেই থাকে। এর সঙ্গীরাও তার ব্যতিক্রম রঙে মোটেই বিচলিত নয়। তবে সাদা রঙের কারণে শিকারিরা আকৃষ্ট হয় বেশি। যেমনটি হয়েছে কেনিয়ার মা জিরাফ ও এর বাচ্চার বেলায়।
লুসিজম নামক একটি জিনগত সমস্যার কারণে প্রাণীদের ত্বকের কিছু কোষ ছাড়া বাকি কোষগুলো রঞ্জক উপাদান তৈরি করতে পারে না। তাই এদের গায়ের রং সাদাটে ধরনের হয়। তবে এদের সম্পূর্ণ আলবিনো বা ধবলগ্রস্ত প্রাণীদের মতো একেবারেই সাদা দেহ আর নীল বা লাল রঙের চোখ হয় না। আলবিনো প্রাণীদের ত্বকে মেলানিন উৎপন্ন হয় না। এদের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যায়, কিন্তু লুসিস্টিকদের হয় না। ফলে তাদের বেঁচে থাকতে সমস্যা হয় না।
এই দুই সাদা জিরাফের মধ্যে কেনিয়ার জিরাফটি একটু বেশি সাদা। আর তানজানিয়ারটি একটু কম। বিশেষ করে এর পায়ের দিকে রঙের ছোপ দেখা যায়। স্বাভাবিক জিরাফের মতো না হলেও তা একবারে সাদাও নয়। কিন্তু শিকারির হাতে মারা পড়া জিরাফদুটো আরো বেশি সাদা ছিলো।