আইপিএলে ইতিহাস গড়লেন সাঞ্জু স্যামসন, কিন্তু তা মোড়ানো গেলো না সাফল্যের চাদরে। অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক ম্যাচে সেঞ্চুরি করা প্রথম ব্যাটসম্যান তিনি। ২২২ রানের লক্ষ্যে রাজস্থান রয়্যালসকে নিয়ে গিয়েছিলেন জয়ের একেবারে কাছে। তবে শেষ বলে প্রয়োজনীয় ৫ রান তুলতে গিয়ে ধরা পড়লেন দীপক হুদার হাতে। তাতে বীরত্ব গাথা লেখা হলো না স্যামসনের। প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়নদের ৪ রানে হারিয়ে এই আসর শুরু করলো পাঞ্জাব কিংস। ৭ উইকেটে ২১৭ রানে থামে রাজস্থান।
লোকেশ রাহুল, দীপকের ব্যাটে তাণ্ডব চালিয়েছিল পাঞ্জাব কিংস। ৬ উইকেটে ২২১ রান করে স্বস্তিতেই ছিল তারা, কিন্তু স্যামসন ক্রিজে নামার পর তা উধাও। ২২২ রানের টার্গেট, চতুর্থ ওভারের দুই বল শেষ হতেই নেই ২৫ রানে ২ উইকেট। তিন নম্বরে ক্রিজে নামেন স্যামসন। তার ব্যাটিং তাণ্ডবে ম্যাচ কব্জায় নেয় রাজস্থান।
দুই ওপেনার বেন স্টোকস ও মানান ভোহরার বিদায়ের পর স্যামসনের সঙ্গে স্বস্তিদায়ক জুটি গড়লেও বড় অবদান রাখতে ব্যর্থ হন জস বাটলার ও শিবম দুবে। যদিও তাদের ছোটখাটো ঝড় দলকে রেখেছিল ছন্দে।
২ উইকেট হারালেও স্যামসনের ব্যাটে পাওয়ার প্লেতে ৫৯ রান করে গতি ধরে রাখে রাজস্থান। তার সঙ্গে ৪৫ রানের জুটিতে ১৩ বলে ২৫ রান করেন বাটলার এবং দুবে ৫৩ রানের জুটি গড়তে খেলেন ১৫ বলে ২৩ রানের ইনিংস।
মাত্র ১০.২ ওভারে দলীয় স্কোর একশ পার করে ফিফটি স্পর্শ করেন স্যামসন। ৩৩তম বলে পেছনে উইকেটকিপার লোকেশ রাহুলের মাথার ওপর দিয়ে বাউন্ডারি মেরে পঞ্চাশ করেন তিনি। পরের বলেই পাঞ্জাবের রিলি মেরেডিথের এলবিডাব্লিউর আবেদনে আম্পায়ার আউট দিলেও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি।
১৩তম ওভারে দুবের বিদায়ের পর মাঠে নামেন রিয়ান পরাগ। তাকে সঙ্গে নিয়ে স্যামসন আরও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেন। মাত্র ১৯ বলে পঞ্চাশ ছোঁয় তাদের জুটি। ১১ বলে ১ চার ও ৩ ছয়ে পরাগ ২৫ রানে আউট হলে ভাঙে ৫২ রানের এই জুটি। তবে লড়াই চালিয়ে যান স্যামসন। ১৮তম ওভারের প্রথম তিন বলে দুটি চার ও একটি ছয়ে ৫৪ বলে সেঞ্চুরি করেন তিনি। রেকর্ড গড়া শতক হাঁকাতে ১২ চার ও ৫ ছয় মারেন।
শেষ দুই ওভারে ২১ রান দরকার ছিল রাজস্থানের। কিন্তু প্রথম বলেই রাহুল তেওয়াতিয়া আউট হন। ক্রিস মরিসের সিঙ্গেলে স্ট্রাইকে গিয়েই ছয় মারেন স্যামসন। শেষ ওভারে লাগতো ১৩ রান। আর্শদীপ সিংয়ের চতুর বোলিংয়ে প্রথম তিন বলে আসে ২ রান। চতুর্থ বলে স্যামসনের ছক্কায় আবার ম্যাচে উত্তেজনা ফেরায় রাজস্থান। পরের বলে লং অফে বল পাঠালেও সিঙ্গেল নিতে আসা মরিসকে ফেরাত পাঠান অধিনায়ক। তাতে ম্যাচ বাঁচাতে শেষ বলে অন্তত চার রান লাগতো। সুইপার কভারটা ঠিকমতো ব্যাটে-বলে হয়নি, বাউন্ডারির কিছুটা সামনে থেকে ক্যাচ ধরেন দীপক। ম্যাচ জয়ের উল্লাসে মাতে পাঞ্জাব।
৬৩ বলে ১২ চার ও ৭ ছয়ে ১১৯ রানে ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে মাঠ ছাড়েন স্যামসন। তবে রোমাঞ্চকর ম্যাচ উপহার দিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে প্রশংসা ঠিকই কুড়ালেন রাজস্থান অধিনায়ক। সঙ্গে জিতেছেন ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার।
পাঞ্জাবের পক্ষে আর্শদীপ সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন। দুটি উইকেট পান মোহাম্মদ শামি।