ভারত থেকে আরও ৫০ হাজার টন চাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। প্রতি কেজি ৩৪ টাকা ৯৩ পয়সা দরে এসব চাল কেনা হবে। ভারতের পি কে এগ্রি লিংক প্রাইভেট লিমিটেড খাদ্য অধিদপ্তরকে এসব চাল সরবরাহ করবে। একইসঙ্গে পার্শ্ববর্তী এই দেশ থেকে জি টু জি ভিত্তিতে (সরকার থেকে সরকার) আরও এক লাখ টন চাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এসব চাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল।
কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, খাদ্য অধিদপ্তরের প্রস্তাবে ভারতের ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফার্মার্স প্রকিউরমেন্ট প্রসেসিং অ্যান্ড রিটেইলিং কো-অপারেশনের কাছ থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এক লাখ টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া খাদ্য অধিদপ্তরকে ভারতের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পি কে এগ্রি লিংক লিমিটেডের কাছ থেকে ১৭৪ কোটি ৬৫ লাখ ৮৩ হাজার ২০০ টাকায় ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি। এ হিসাবে প্রতি টন চালের দাম পড়বে ৪১১ দশমিক ৯৩ ডলার।
ধান কাটার ভরা মওসুমে চাল আমদানির নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কিনা এমন এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজন অনুযায়ী চাল আমদানি করা হচ্ছে। এমনভাবে আমদানি হচ্ছে যাতে কৃষকের ক্ষতি না হয় আবার বাজারও স্থিতিশীল থাকে।
লকডাউনের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য কোনো সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনার বিস্তার রোধ এবং তার প্রভাবে সহযোগিতা দেওয়ার বিষয়টি ঠিক করার জন্য আলাদা কর্তৃপক্ষ রয়েছে। সরকার সব সময় সাধারণ মানুষ যাতে স্বস্তিতে থাকেন সে ব্যবস্থা করে যাচ্ছে। এখন পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজন হলে সরকার উদ্যোগ নেবে। তবে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে এখনও পর্যন্ত এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের জিডিপির প্রক্ষেপন বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, এসব সংস্থা ধারণার ভিত্তিতে একেক সময় একেক ধরনের প্রক্ষেপণ করে। সরকার বাস্তব তথ্য ও উপাত্তের পরিপ্রেক্ষিতে হিসাব করে থাকে। তবে কোনো সংস্থার কম বেশি প্রক্ষেপণ বিষয় নয়, জিডিপি প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে কাজ করতে হবে। সরকার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শাহিদা আক্তার বলেন, ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় বুধবার আটটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে সাতটি। সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের তিনটি, গণপূর্তের একটি, জ্বালানি খনিজ সম্পদ বিভাগের একটি ও সেতু বিভাগের একটি প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। এসব প্রস্তাবে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা। সরকারি কোষাগার থেকে দিতে হবে এক হাজার ৮৩ কোটি টাকা। ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে ৬৭২ কোটি টাকা। এরমধ্যে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাবে সুইজাল্যান্ডের এওটি ট্রেডিংয়ের কাছ থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি কেনার একটি প্রস্তাব রয়েছে। এতে পেট্রোবাংলার ২৪৩ কোটি টাকা ব্যয় হবে।