করোনা সংক্রমণ রুখতে কঠোর হচ্ছে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের সরকার। দিনের বেলা ৫ জনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এছাড়া পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রতি শুক্রবার রাত ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৭টা পর্যন্ত সম্পূর্ণ লকডাউনের কথাও ঘোষণা করেছে রাজ্যটি।
একইসঙ্গে মুম্বাই শহরেও জারি করা হয়েছে রাত্রিকালীন কারফিউ। রাত ৮টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত এই কারফিউ কার্যকর থাকবে।
রোববার (৪ এপ্রিল) রাজ্য সরকারের প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আপাতত সম্পূর্ণ লকডাউন করার কোনো চিন্তা ভাবনা নেই। কিন্তু লকডাউন হতে পারে এমন আশঙ্কায় মুম্বাইসহ মহারাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি শহর থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন অন্য রাজ্য থেকে কাজ করতে আসা শ্রমিকেরা।
পুণের মতো মুম্বাই শহরে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হলেও ছাড় থাকছে হোম ডেলিভারি, খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে। রেস্তোরাঁগুলোতে কেবল খাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া গণপরিবহন চলবে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে। বন্ধ থাকবে শপিংমল, সিনেমা হল।
গোটা মহারাষ্ট্রে লকডাউন না ঘোষণা করা হলেও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় দিনে ৫ জনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রাজ্যটির প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী, কোথাও ৫ জনের বেশি মানুষ একসঙ্গে জড়ো হতে পারবেন না। ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে চলবে সরকারি অফিস।
মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক জানিয়েছেন, বেসরকারি যানবাহন ৫০ শতাংশের বেশি যাত্রী নিতে পারবে না। রোববার মন্ত্রিসভার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের আলোচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সংক্রমণ রোধে সরকার সাধারণ মানুষের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করায় আশঙ্কার মধ্যে আছেন অন্য রাজ্য থেকে কাজ করতে আসা শ্রমিকরা। সম্পূর্ণ লকডাউনের আশঙ্কায় অনেক শ্রমিকই মহারাষ্ট্র ছেড়ে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন।
মুম্বাইয়ের স্টেশনে অপেক্ষারত শ্রমিকদের একজনের মতে, ‘আমাদের ভয়, আবার লকডাউন হতে পারে। গতবার আমাদের টাকা শেষ হয়ে গিয়েছিল। আয় শূন্য হয়ে পড়েছিলাম। তাই এবার আর ঝুঁকি না নিয়ে আগেই বাড়ি ফিরতে চাই।’
রোববারও ভারতে রেকর্ডসংখ্যক মানুষ করোনায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৯৩ হাজার ২৪৯ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন।
এখন পর্যন্ত দেশটিতে এক কোটি ২৪ লাখ ৮৫ হাজারের বেশি মানুষ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।