মিয়ানমারে সামরিক জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এখন পর্যন্ত ৪৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন শত শত মানুষ। সেনা সরকার দাবি করেছে, তারা জনগণের নিরাপত্তা দিতে এবং গণতন্ত্র ফেরাতে কাজ করছে। খবর রয়টার্সের
গত ১ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট উইন্ট মিন্ট ও ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চিসহ শীর্ষ নেতাদের আটক করে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এ সময় এক বছরের জন্য গোটা দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হওয়া জাতীয় নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ এনে ক্ষমতা দখল করে সামরিক জান্তা।
বিতর্কিত সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই ফুঁসে ওঠে দেশটির মানুষ। সেনা শাসনের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ করছেন দেশটির সাধারণ মানুষ। বিক্ষোভ দমনে কঠোর থেকে কঠোরতর হচ্ছে জান্তা সরকার। বিক্ষোভে সরাসরি গুলি চালানোর ঘটনা হরহামেশা ঘটছে। আর এতে প্রাণ হারাচ্ছেন গণতন্ত্রপন্থিরা।
প্রায় দুই মাস ধরে চলা বিক্ষোভে গুলির ঘটনায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে শনিবার (২৭ মার্চ)। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে একদিনেই নিহত হয়েছেন ১১৪ বিক্ষোভকারী। এরপর রবিবার (২৮ মার্চ) আরও ১২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনারস অ্যাডভোকেসি গ্রুপ। নিহতদের শেষকৃত্যে রবিবার ফের গুলি চালায় নিরাপত্তা বাহিনী।
এর আগে শুক্রবার (২৬ মার্চ) সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি টেলিভিশন চ্যানেলে বিবৃতি দিয়ে বিক্ষোভকারীদের গুলি করার হুমকি দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়েছিল, বিক্ষোভে আসলে মাথায় ও পেছনে গুলি লাগতে পারে।
বিক্ষোভে গুলি ও নিহতের ঘটনায় বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলো নিন্দা জানিয়েছে। বিশ্বের ১২ দেশের প্রতিরক্ষা প্রধান এই ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছে। শনিবার দেশটির সশস্ত্র বাহিনী দিবসে অংশ নিয়েছে আট দেশের প্রতিনিধি। এদিনই ১১৪ বিক্ষোভকারীকে হত্যা করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, সীমান্তবর্তী অঞ্চলে জাতিগত বিদ্রোহীদের দমনে বিমান হামলা চালাচ্ছে জান্তা সরকার। এর ফলে জীবন বাঁচাতে অন্তত ৩ হাজার মানুষ মিয়ানমার ছেড়ে পার্শ্ববর্তী দেশ থাইল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছে।