বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুসসহ দলের চারজন নেতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- দলটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, রাজশাহী মহানগর সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন।
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহীর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোসাব্বিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
তবে আদালতের বিচারক সাইফুল ইসলাম শুনানি শেষে মামলা আমলে নিলেও আজ এ ব্যাপারে কোনো আদেশ দেননি। এর আগে সোমবার (১৫ মার্চ) রাতে মামলার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পান রাজশাহী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। এর আগে গত মঙ্গলবার (৯ মার্চ) রাজশাহী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলের কাছে মামলার অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছিলেন বাদী।
মামলা দায়েরকালে আদালতে বাদী ছাড়া রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, যুগ্ম-সম্পাদক আসাদুজ্জামান আজাদ, আহ্সানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসলাম সরকার ও মীর ইসতিয়াক আহম্মেদ লিমন, মহানগর যুবলীগ সভাপতি রমজান আলী, সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন বাচ্চুসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে- গত ২ মার্চ বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাসহ নির্বাচিত সরকার উৎখাতের প্রকাশ্য ঘোষণা ও হুমকি প্রদর্শন করে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ করেছে আসামিরা। অভিযোগে অপরাধ হিসেবে ১২৩ (ক), ১২৪ (ক) ও (৩৪) দণ্ডবিধি উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও বলা হয়েছে- গত ২ মার্চ রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলনের সঞ্চালনায় সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বিএনপির এ চার নেতা পূর্বপরিকল্পিতভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার উৎখাতের অসৎ উদ্দেশ্যে নেতাকর্মী, সাংবাদিক, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে মিজানুর রহমান মিনু প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘হাসিনা রেডি হও, আজ সন্ধ্যার সময়, কালকে সকাল তোমার নাও হতে পারে, মনে নাই পঁচাত্তর সাল? পচাত্তর সাল মনে নাই?’
মিজানুর রহমান মিনুর এ ঘোষণার পর দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উগ্রভাব ছড়িয়ে পড়ে। কিছু নেতাকর্মী সমাবেশের এ বক্তব্য ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচার করেন। সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদুস তালুকদার দুলুসহ অন্যরাও একইভাবে বক্তব্য দিয়ে ঘৃণা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করেন এবং বেআইনিভাবে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকার উৎখাতের হুমকি দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাসহ নির্বাচিত সরকার উৎখাতের প্রকাশ্য ঘোষণা ও হুমকি দিয়ে তারা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ করেছেন। যা বাংলাদেশের নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি বিপদজনক ও হুমকি স্বরূপ বলেও এ আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।