বিশ্বের বিরলতম এক রোগ স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাটরোফি (এসএমএ)। সচরাচর এই রোগে আক্রান্তদের চোখে পড়ে না। বিরল এ রোগের ওষুধও মেলে না সহজে।
তবে গোলমেলে এই রোগের চিকিৎসার জন্য বিশ্বের সবচেয়ে দামী ওষুধের অনুমোদন দিল ইংল্যান্ডের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা। এর এক ডোজের দাম শুনলে যে কারোরই চোখ ছানাবড়া হতে বাধ্য। কেননা এই এক ডোজ ওষুধের দাম বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৮ কোটি টাকার বেশি।
বিরলতম এসএমএ-র চিকিৎসায় নোভার্টিস জিন থেরাপিস বাজারে ছেড়েছে জোলগেনসমা নামের ওই ওষুধ। যে ওষুধের এক ডোজের দামই ১.৭ মিলিয়ন ইউরো (১৮ কোটি টাকা)। ইংল্যান্ডের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা গত সোমবার এই ওষুধ বাজারে বিক্রির ছাড়পত্র দিয়েছে।
ভয়ংকর এই রোগ কোটিতে এক জনের শরীরে দেখা যায়। যার হয়, তার তো জীবন বরবাদই, সঙ্গে ডুবে যায় পরিবারও। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন বিরলতম জেনেটিক এই রোগ মানুষকে পঙ্গু করে দেওয়ার পাশাপাশি শরীরের পেশিগুলিকে দুর্বল করে দেয়। এক পর্যায়ে হাঁটাচলার শক্তিও হারিয়ে ফেলেন এসএমএ আক্রান্ত ব্যক্তি। এভাবেই ধুকে ধুকে মুত্যু হয় তার।
তবে অনেকে দীর্ঘদিন এ রোগে আক্রান্ত হয়ে জীবনযাপন করেন। তাদেররকে এ রোগ থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে জমিবাড়ি বিক্রি করেও ব্যর্থ হয়েছে পরিবার। এ রাজরোগের চিকিৎসা যে কত ব্যয়বহুল, তা জানান দিল নতুন এ ওষুধ।
তবে সব বয়সের রোগীরা এই ওষুধ নিতে পারবেন না বলে জানানো হয়েছে। কেবল যেসব শিশু এসএমএ রোগে আক্রান্ত, তাদের শরীরে প্রয়োগ করা যাবে জোলগেনসমা। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে প্রধানত শিশুরা এসএমএ-র প্রথম টাইপ নিয়ে পৃথিবীতে আসে। যা পরে তাদের প্রাণহানির কারণ হতে পারে। জোলগেনসমার প্রয়োগ এসব শিশুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।
পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে জোলগেনসমার মাধ্যমে ভেন্টিলেটর ছাড়াই শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারে শিশুরা। বিরলতম রোগের কারণে শরীরে যে প্রোটিনের অভাব ঘটে, জোলগেনসমা তা পূরণ করতে সক্ষম। শিশুকালে এই ওষুধের প্রয়োগে পেশির চলাচল স্বাভাবিক হয় বলেও জানানো হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি