স্পটে না গিয়ে বিল তোলা বা কাজ দেখানোর অবসান ঘটাতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। সনাতনি পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আধুনিক যন্ত্রচালিত পদ্ধতিতে যাচ্ছে ডিএনসিসি। রোজার আগেই কোনো একটি ওয়ার্ডকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে ধরে মশককর্মীদের উপস্থিতি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে চালু করার ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, “রোজার পর সবগুলো ওয়ার্ডে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হবে। তবে রোজার আগে একটি ওয়ার্ডে হলেও চালু করতে চাই।”
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) সকালে গুলশান-বারিধারা লেকের গুদারাঘাট এলাকায় পরিদর্শনপূর্ব সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র একথা বলেন। এসময় ডিএনসিসি’র প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, ২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাসুম গনিসহ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র বলেন, “আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি মশককর্মীদের মনিটরিং করাটা আমাদের বিরাট চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আমাদের সনাতনি পদ্ধতি থেকে বের হয়ে আধুনিক বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে যেতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “মশক নিয়ন্ত্রণ অভিযানের চতুর্থ দিন চলছে। আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ লেক। লেকের কোণায় লার্ভার জন্ম হয়। এজন্য বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি লেক পাড়ে যেনো লার্ভিসাইডিং করা হয়।”
খালপাড় বা খাল দখল না করার অনুরোধ জানিয়ে মেয়র বলেন, “সবাইকে বার বার অনুরোধ করছি খালের পানি প্রবাহ যেনো ঠিক রাখা হয়। পানি প্রবাহ না থাকলে মশার লার্ভার সৃষ্টি হয়। সেখান থেকেই মশার বিস্তার ঘটে।”
দখলদারদের উদ্দেশে বলেন, “নিজের স্বার্থে খাল দখল করে রেখেছেন জনগণ ভোগান্তিতে পড়ছে। তাই নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে আসুন দেশের চিন্তা করি। ঢাকা শহরকে ঠিক করতে গেলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। অনেক বড় এই শহর ঠিক করতে হলে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে।”
খালের পর এবার লেকের দায়িত্ব চায় সিটি করপোরেশন। মেয়র বলেন, “আমরা বলেছি লেকগুলো আমাদের দিয়ে দেওয়ার জন্য। লেকগুলো দিয়ে দিলে আমরা দেখভাল করতে পারি। কাজ কিন্তু আমরাই করছি। এখন দৃষ্টিনন্দন হয়েছে। কিন্তু এর দায়িত্ব আমাদের না। তাই আমরা চেয়েছি লেক আমাদের দায়িত্বে দেওয়া হোক।
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিলো। তবে সেটি পিছিয়ে গেছে। আমরা চাই লেক আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হোক।”
মশককর্মীদের নিয়ে মেয়র বলেন, “চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মশককর্মীদের মনিটরিং করা। মনিটরিংটা যদি করতে পারি তাহলে জবাবদিহিতার মধ্যে আসবে। আমরা বলছি ১২০০ কর্মী। এখানে ১২০০ কর্মী কি আছে? এটাকে বায়োমেট্রিক করতে হবে। যুগের পর যুগ বছরের পর বছর সনাতনি পদ্ধতিতে সব চলে আসছে সেটিকে আধুনিক করতে হবে। ১২০০ কর্মী কতোটুক কাজ করছে সেটি দেখার জন্য ট্রাকিং পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। এরইমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। রোজার পর থেকে সম্পূর্ণভাবে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি শুরু করতে পারবো। আমার চ্যালেঞ্জ হলো একটি ওয়ার্ডে হলেও তার আগে শুরু করার জন্য। আমি চাচ্ছি রোজার আগে একটি ওয়ার্ডে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার।”
ড্রোন নিয়ে মেয়র বলেন, মশা নিধনে ড্রোন চালু করার চিন্তাভাবনা করছি। সেটা নিয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু ড্রোন চালু করার পর ড্রপলেট যেটা পড়বে সেটি যদি ঠিকমতো না যায় তাহলে কিন্তু ওটা ব্যর্থ হবে। শুধু ড্রোন চালু করলাম দেখতে খুব ভালো লাগলো কিন্তু সেটি যদি কার্যকর না হয় তাহলে লাভ নেই। কোনো পদ্ধতি চালুর পর ব্যর্থ হোক সেটা আমরা চাই না। আমরা চাই সঠিকভাবে কাজটি যেনো হয়। সেজন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই চালু করা হবে।”