ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার স্ট্র্যান্ড রোডে রেলের নিউ কয়লাঘাট ভবনে অগ্নিকাণ্ডে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চারজন ফায়ার সার্ভিস কর্মী, একজন আরপিএফ কর্মী এবং একজন হেয়ার স্ট্রিট থানার এএসআই রয়েছেন। আর একজনের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগে ওই ভবনে। ১৪ তলা ভবনটির ১৩ তলায় প্রথমে আগুন লাগে বলে জানা গেছে। আগুন ছড়িয়ে পড়ে ভবনের ১২ তলায়। সেখানে রেলের সার্ভার রুমটি ভস্মীভূত হয়েছে। এর ফলে উত্তর-পূর্ব ভারতে রেলের বুকিং ব্যবস্থা ব্যাপক ভাবে ব্যাহত হয়েছে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
প্রথমে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পর ১৩ তলায় পৌঁছনোর চেষ্টা করেন কয়েকজন ফায়ার সার্ভিস কর্মী। ১২ তলায় পৌঁছে তারা লিফ্ট থেকে বেরোনোর চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রচণ্ড তাপের ফলে তারা ফিরে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু চারপাশের আগুনের তাপ ও বিষাক্ত গ্যাসে তারা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন এবং এর ফলেই তাদের মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে।
আগুন লাগার খবর পেয়ে প্রথমেই দমকলের বেশ কয়েকটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। এতটা উঁচুতে আগুন লাগায় তা নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হাইড্রলিক ল্যাডার নিয়ে যাওয়া হয়। আশপাশের ভবনে যাতে আগুন ছড়িয়ে না পড়ে তার চেষ্টা করেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। নিরাপত্তার কারণে ওই ভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। ভবনের কাছে আইসিইউ সুবিধাযুক্ত বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুল্যান্স তৈরি রাখা হয়েছে। উদ্ধার কাজে আলোর ব্যবস্থার জন্য কয়েকটি জেনারেটর আনা হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই এলাকার মানুষ। স্ট্র্যান্ড রোডের একাংশ বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ করে দেয়া হয়। আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান প্রশাসন এবং পুলিশ কর্মকর্তাকরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যরা।
রাত সোয়া ১১টা নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, ক্ষতিপূরণ ছাড়া মৃতদের পরিবারপিছু একজনকে সরকারি চাকরিও দেয়া হবে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা