রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে করা মামলায় নিহত তরুণীর বান্ধবী নেহার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার (৭ মার্চ) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এদিন আসামি নেহার পক্ষে তার আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধরণ নিবন্ধন (জি আর) শাখার পুলিশের এএসআই ফারুক হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত সিকদার নেহার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে ৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে আজিমপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নেহা ওই তরুণীর ধর্ষণের সহযোগী হিসেবে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
মোহাম্মদপুর থানা সূত্র জানায়, ২৮ জানুয়ারি মদ্যপানের পর থেকে নেহাও অসুস্থ ছিলেন। তবে গ্রেফতারের সময় তিনি মোটামুটি সুস্থ ও সবল ছিলেন। সেদিন তারা যে মদপান করেন সেগুলো নেহার ছেলে বন্ধু কিনে এনেছিলেন।
এর আগে ৩১ ডিসেম্বর একটি পার্টিতে মদপানের পর রহস্যজনক মৃত্যু হয় ইউল্যাব শিক্ষার্থীর। এ ঘটনায় একটি মামলা করেন নিহত তরুণীর বাবা। মামলার এজাহারে ওই তরুণীকে মদ্যপান করিয়ে ধর্ষণ ও হত্যার কথা বলা হয়েছে। এতে সহযোগী হিসেবে চারজনের নাম উল্লেখসহ মোট পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হচ্ছেন- নিহত তরুণীর বন্ধু মর্তুজা রায়হান চৌধুরী (২১), মামলায় তাকে ধর্ষক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে; নুহাত আলম তাফসির (২১), আরাফাত (২৮) ও নেহা (২৫)। আরেক বন্ধুর নাম জানা যায়নি। মামলায় তাকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই মামলার আসামির আরাফাত মারা গেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৮ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় মর্তুজা রায়হান ইউল্যাব শিক্ষার্থী তরুণীকে নিয়ে মিরপুর থেকে আরাফাতের বাসায় যান। আরাফাতের বাসায় স্কুটার রেখে আরাফাত, ওই তরুণী ও রায়হান একসঙ্গে উবারে করে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ব্যাম্বুসুট রেস্টুরেন্টে যান। সেখানে আগে থেকেই আরেক আসামি নেহা ও একজন সহপাঠী (তরুণ) উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আসামিরা ওই তরুণীকে জোর করে ‘অধিক মাত্রায়’ মদপান করান।
এজাহারে বলা হয়েছে, মদ্যপানের একপর্যায়ে ভুক্তভোগী তরুণী অসুস্থ বোধ করলে রায়হান তাকে মোহাম্মদপুরে তার এক বান্ধবীর বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নুহাতের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তরুণীকে একটি রুমে নিয়ে ধর্ষণ করেন রায়হান। এ সময় রায়হানের বন্ধুরাও রুমে ছিলেন। তাদের চোখের সামনেই ধর্ষণ করা হয়।
ধর্ষণের পর রাতে ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে বমি করলে রায়হান তার আরেক বন্ধু অসিম খান কোকোকে ফোন দেন। সেই বন্ধু পরদিন এসে ওই তরুণীকে প্রথমে ইবনে সিনা ও পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুই দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ৩১ জানুয়ারি তরুণী মারা যান।