আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সোমবার (৮ মার্চ) জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ৫ জন জয়িতাকে সম্মাননা দেবে সরকার। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার কাছ থেকে সম্মাননা পদক গ্রহণ করবেন জয়িতারা। তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সনদ দেয়া হবে।
আজ রবিবার সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে সকাল সাড়ে ১০টায় অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে শিশু একাডেমি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন। এবার দিবসের প্রতিপাদ্য- করোনাকালে নারী নেতৃত্ব, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব।
করোনাকালে বাংলাদেশের ডাক্তার, নার্স, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সকল পর্যায়ের নারীরা গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে জানান মহিলা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।
এবার বরিশালের হাছিনা বেগম নীলা, বগুড়ার মিফতাহুল জান্নাত, পটুয়াখালীর মোসাম্মৎ হেলেন্নছা বেগম, টাঙ্গাইলের রবিজান ও নড়াইলের অঞ্জনা বালা বিশ্বাস শ্রেষ্ঠ জয়িতা হিসেবে সম্মাননা পাচ্ছেন বলেও জানান ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ বছর অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী বরিশাল বিভাগ থেকে বরিশাল জেলার হাছিনা বেগম নীলা। তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী। শিক্ষা ও চাকুরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী হলেন রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলার মিফতাহুল জান্নাত। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএসএস অধ্যনরত ও একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সফল নারী।’
‘সফল জননী হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতা হয়েছেন বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলার মোসাম্মৎ হেলেন্নছা বেগম। তিনি তার ছয় ছেলে ও তিন মেয়ের সবাইকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। তার বড় ছেলে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি, মেজ ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিদেশে উচ্চ শিক্ষায় অধ্যয়নরত আছেন একজন। নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করার ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতা ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল জেলার রবিজান। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধচলাকালে পাক-হানাদার বাহিনী দ্বারা নির্মম পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।’
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, এছাড়া সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখায় জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতা হয়েছেন খুলনা বিভাগের নড়াইল জেলার অঞ্জনা বালা বিশ্বাস। তিনি নারীদের দর্জি ও হাতের কাজের মাধ্যমে স্বনির্ভর করে গড়ে তোলার জন্য ১৯৭৫
সালে মাতৃকেন্দ্র নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। বর্তমানে সরকারী চাকরিতে ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ নারী রয়েছে বলে জানান মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণীসহ বিশেষ ক্রোড়পত্র ও স্মরণিকা প্রকাশ করা হবে। শিশু একাডেমিতে ৮ মার্চের অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন দিয়ে সজ্জিত করা হবে। দেশের সব জেলা ও উপজেলায় নারী উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন, অধিকার এবং এ বিষয়ে প্রচার ও সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে র্যালি, সমাবেশ ও আলোচনা অনুষ্ঠানের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের মহাপরিচালক রাম চন্দ্র দাস, জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান চেমন আরা তৈয়ব, অতিরিক্ত সচিব ফরিদা পারভীন ও প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার উপস্থিত ছিলেন।