অপরূপ প্রকৃতির দেশ বাংলাদেশ। লাল-সবুজের দেশে ফসলের মাঠে লালশাক আর পালংশাক রোপণ করে পরম মমতায় বাংলাদেশের শহীদ মিনার এঁকেছেন কুলিয়ারচরের কৃষক মো. রুমান আলী শাহ।
লালশাক আর পালংশাকের চারাগুলো যত বড় হচ্ছে, ততই স্পষ্ট ও নান্দনিক হয়ে উঠছে শহীদ মিনার। ভাষাশহীদের শ্রদ্ধা জানাতেই ফসলের খেতে এমন শিল্পকর্ম এঁকেছেন বলে জানান কৃষক রুমান আলী শাহ। যে জমিতে পরম ভালোবাসায় ফসল ফলান, সেই জমির ফসলের মধ্যে এবার হৃদয়খচিত শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন তিনি।
কৃষক মো. রুমান আলী শাহ কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার গোবরিয়া-আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নের জাফরাবাদ গ্রামের কৃষক জিন্নাত আলী মিয়ার বড় ছেলে। এক ছেলে ও এক মেয়ের বাবা ৪৩ বছর বয়সী আবদুল রুমান কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। দেড় একর আয়তনের খামারের মাঝখানে লম্বা ছয় শতক জমিতে কারও সহযোগিতা ছাড়াই এঁকেছেন দৃষ্টিনন্দন এ শিল্পকর্ম।
কৃষক রুমান জানান, মাতৃভাষা ও ভাষাশহীদের প্রতি অগাধ ভালোবাসা থেকেই ফসলের মাঠে ভালোবাসার প্রকাশ ঘটিয়েছি। আগে তিনি একই জায়গায় লালশাক ও পালংশাক দিয়ে জাতীয় পতাকা, মানচিত্র ও নৌকা এঁকে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তার এ কাজ দেখে নতুন প্রজন্মের শিশু ও শিক্ষার্থীরা সচেতন হোক। রক্তে অর্জিত মাতৃভাষার ও স্বাধীনতার প্রতি তাদের শ্রদ্ধা বাড়ুক এই প্রত্যাশাই কৃষক রুমানের।
স্থানীয় বাসিন্দা সাদেক হোসেন বলেন, আমাদের মধ্য থেকে দিন দিন দেশপ্রেম উঠে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের এলাকার ছেলে রুমান যা করেছে, তা দেশপ্রেমের অনন্য এক নজির। তরুণ প্রজন্ম এই কর্ম দেখে উজ্জীবিত হবে। রক্তে অর্জিত মাতৃভাষা প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে এই কামনাই করি।
কুলিয়ারচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কৃষক রুমান এর আগেও ফসলের মাঠে দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন তার লাশশাক ও পালংশাকে দিয়ে জাতীয় পতাকা ও মানচিত্র এঁকে। এবার ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে এঁকেছেন শহীদ মিনার। আর্থিক লাভবান না হলেও দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন রুমানের শৈল্পিক কাজ দেখতে ইতোমধ্যেই আসতে শুরু করেছেন। তার কাজে উপজেলা কৃষি বিভাগ গর্বিত।