পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের সঞ্চালক মোহাম্মদ রফিক সম্পর্কে বলতে গিয়ে তার বয়সটাও উল্লেখ করলেন। একটু দূরেই দাঁড়ানো রফিকের কোনো এক সতীর্থ বলে উঠলেন ‘ওর জন্য বয়স কোনো ব্যাপার না। আগেও যা ছিল, ও এখনও তাই।’ বাংলাদেশের সাবেক বাঁহাতি এই স্পিনারের জন্য বয়স যে আসলেই বাধা নয়, লেজেন্ডস চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মিললো তার প্রমাণ।
সাবেক ক্রিকেটারদের নিয়ে কক্সবাজারে আয়োজন করা ১০ ওভার ১০ বলের (৭০ বল) এই টুর্নামেন্টে আগের মতো করেই বাঁহাতের ভেল্কি দেখিয়েছেন ৫০ বছর বয়সী রফিক। ব্যাট হাতেও সাজিয়েছেন চার-ছক্কার পসরা। ৫ ম্যাচে ৮ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ৭৫ রান করে হয়েছেন টুর্নামেন্ট সেরা। তবে ফাইনালে তার স্পিন ঘূর্ণি একটু বেশিই দেখা গেল, যা মনে করিয়ে দিলো জাতীয় দলের স্পিন কাণ্ডারি রফিকের কথা।
শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে ১৩ রান করা রফিক বল হাতে খালেদ মাহমুদ সুজনের দল এক্সপো রেইডার্সকে একাই কোণঠাসা করে রাখেন, একে একে তুলে নেন ৫টি উইকেট। টানা দুই উইকেট নিয়ে জাগিয়েছিলেন হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও। রফিকের দারুণ বোলিংয়েই ফাইনালে এক্সপো রেইডার্সকে ৩০ রানে হারিয়ে শিরোপা জেতে খালেদ মাসুদ পাইলটের দল একমি স্ট্রাইকার্স।
ফাইনালে টস জিতে আগে ব্যাটিং করে ৮ উইকেটে ১০৪ তোলে একমি স্ট্রাইকার্স। সর্বোচ্চ ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন এহসানুল হক সেজান। জবাবে শুরু থেকেই ম্যাচ সেরা রফিকের স্পিনের বিপক্ষে ভোগা এক্সপো রেইডার্সের ইনিংস ৮ উইকেটে ৭৪ রানে শেষ হয়।
সাবেকদের এই টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে শাসন করেছেন জাতীয় দলের সাবেক ওপেনার জাভেদ ওমর বেলিম। জাতীয় দলে সব সময় ধীর গতিতে ব্যাটিং করা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ছিলেন মারকুটে ভূমিকায়। জেমকন টাইটান্সের হয়ে ২৪৫ রান করা জাভেদ ওমর জিতেছেন টুর্নামেন্টের সেরা ব্যাটসম্যানের পুরস্কার।
মোহাম্মদ রফিকের সমান ৮ উইকেট নিয়েছেন জেমকনের আশিক মজুমদার। তার হাতে উঠেছে সেরা বোলারের পুরস্কার। বোল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে জাদুবে স্টার্স। প্লেট চ্যাম্পিয়ন ও ফেয়ার প্লে অ্যাওয়ার্ড জিতেছে নারায়ণগঞ্জ ওয়ারিয়র্স।
সাগরপাড়ে ঝাউবনে ঘেরা দুটি সবুজ গালিচায় মিলন মেলা বসেছিল। জাতীয় দলের সাবেক তারকা ও ঘরোয়া ক্রিকেটারদের কলরবে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম মুখরিত ছিল তিন দিন। ফাইনাল দিয়ে ৬ দলের লেজেন্ডস চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর্দা নামলো শনিবার।