যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র আইনে পরিবর্তনের আবেদন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। খবর ডয়চে ভেলে।
রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ফ্লোরিডার পার্কল্যান্ড স্কুলে বন্দুক হামলার তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাইডেন বলেন, কংগ্রেসের কাছে অনুরোধ, অস্ত্র আইন সংশোধনের বিল পার্লামেন্টে নিয়ে আসা হোক।
তথ্য বলছে, বন্দুক হামলায় যুক্তরাষ্ট্রে ৩৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর সঙ্গে অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে লড়াই, আত্মহত্যা, হত্যার চেষ্টার ঘটনা ধরলে সংখ্যা তিন গুণেরও বেশি হবে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ১০০ জনের কাছে ১২১টি বন্দুক থাকে। সাধারণ মানুষের কাছে বেশি আগ্নেয়াস্ত্র আছে এমন দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে বন্দুক হামলার মতো পৈশাচিক ঘটনা মাঝে মধ্যেই ঘটে এমন খবর সংবাদ মাধ্যমে আসে। এ কারণে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার এবং এর প্রদর্শন নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংগঠন। অধিকাংশ অঙ্গরাজ্যের কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন।
অস্ত্র আইনে পরিবর্তনের ব্যাপারে বাইডেন বলেন, তার সরকার যত দ্রুত সম্ভব অস্ত্র আইনে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করবে। যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো আইন পরিবর্তন করতে হলে প্রথমে তা কংগ্রেসে আনতে হবে। সেখানে বিল পাস হলে তা যাবে সিনেটে। সিনেট সেই বিলকে ছাড়পত্র দিলে তবেই প্রেসিডেন্ট সই করে বিলকে আইনে পরিণত করতে পারবেন।
এর আগে, পার্কল্যান্ডের স্কুলে বন্দুক হামলা চালানোর পর ডেমোক্রেট অধ্যুষিত মার্কিন কংগ্রেস অস্ত্র আইন সংশোধনের একটি বিল এনেছিল। কিন্তু রিপাবলিকান অধ্যুষিত সিনেট সেই বিল পাস হতে দেয়নি। ফলে তখন অস্ত্র আইন পরিবর্তন করা সম্ভব হয়নি।
বাইডেনের ওই বক্তব্যের পরে মার্কিন কংগ্রেসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, ফের কংগ্রেসে অস্ত্র আইন পরিবর্তনের বিল আনা হবে।
বাইডেন আরও বলেন, যে প্রক্রিয়ায় এখন যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র কেনা যায়, সেই প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন দরকার। যিনি অস্ত্র কিনছেন, তার বিষয়ে সমস্ত তথ্য থাকতে হবে পুলিশের কাছে। পুলিশ ছাড়পত্র দিলে তবেই অস্ত্র কেনা যাবে। বন্দুকের ম্যাগজিনের মাপ বড় হবে না। উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বন্দুক খোলা বাজারে বিক্রি করা যাবে না। ওই ধরনের বন্দুক নিয়ে বন্দুকধারী যদি হামলা চালায়, তাহলে বিক্রেতার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। সে কারণেই অস্ত্র আইনে পরিবর্তন হওয়া দরকার।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে ফ্লোরিডার স্কুলে হামলা চালিয়েছিল ১৯ বছরের নিকোলাস ক্রুজ। ১৪ জন ছাত্রছাত্রী এবং তিনজন শিক্ষাকর্মীর মৃত্যু হয়েছিল ওই ঘটনায়। নিকোলাসের এখনো বিচার চলছে। পুলিশ আদালতকে জানিয়েছে, ওই ব্যক্তির মানসিক সমস্যা ছিল। তা সত্ত্বেও ওই ব্যক্তি কী ভাবে বন্দুক কিনেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।