spot_img

চীনের সেনা অপসারণ দেখেও আতঙ্কিত ভারত

অবশ্যই পরুন

চীন নিয়ে ভারতের আতঙ্ক যেন কাটছেই না। তারা যাই করে, তাতেই উদ্বেগে ভোগে ভারত। এতদিন লাদাখে নিয়ন্ত্রণ রেখায় চীনের সেনা মোতায়েন নিয়ে উদ্বেগে ভুগেছে ভারত। এবার তাদের সেনা অপসারণ করা দেখে উদ্বেগ কমার বদলে আরও বেড়ে গিয়েছে ভারতের।

লাদাখে সংঘর্ষের পরপরই রাতারাতি সেখানে ঘাঁটি, রাস্তা, চেক পোস্টসহ বিভিন্ন সামরিক স্থাপণা নির্মাণ করে নিজেদের অবস্থান সুসংহত করেছিল চীন। সেই ঘটনা অবাক হয়ে দেখা ছাড়া ভারতের জন্য আর কিছুই করার ছিল না। এবার চীনের সেনা অপসারণ দেখে আরও বেশি অবাক হয়েছে তারা। চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) এত দ্রুত কাজটা করেছে যে, মনে হচ্ছে তারা স্রেফ বাতাসে মিলিয়ে গিয়েছে। পিএলএ’র এই শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণ দেখেই আতঙ্ক বাড়ছে ভারতের। প্রযুক্তিতে তো চীনের ধারে কাছেও নেই ভারত, এবার দেখা গেল দক্ষতার দিক থেকেও তারা প্রতিবেশি দেশটি থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে।

চীনের দ্রুত সেনা অপসারণে রীতিমতো অবাক হয়েছেন ভারতীয় সেনা কর্মকর্তারা। হতবাক হয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ও। প্রশ্ন উঠেছে, প্যাংগংয়ে সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু থেকে যত দ্রুত পিছিয়েছে তত দ্রুতই কি ফিরবে লালফৌজ? বিশ্লেষকদের মতে, চীনের দ্রুত পশ্চাদপসারণ নিয়ে সাউথ ব্লক উদ্বিগ্ন। যে ইস্যুতে গত নয় মাস ধরে অশান্তি ও পানিঘোলা হয়েছে সেই সেনা অপসারণের কাজটা চীন এত দ্রুততার সঙ্গে এবং এত সুশৃঙ্খলভাবে করছে যে অবাক হয়ে গিয়েছেন ভারতের নিরাপত্তা এজেন্সির কর্তারাও। সেই সঙ্গে এই প্রশ্নও উঠেছে, যদি কঠিন কাজটা এত দ্রুত ও সহজে করা সম্ভব হয়, তাহলে ফের উত্তেজনা বা সংঘাতের পরিবেশ তৈরি হলে ততটাই দ্রুততার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণরেখায় ফের সেনা ও ট্যাংকবাহিনী মোতায়েন করতে সক্ষম হবে চীন।

সংবাদমাধ্যম ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মাইনাস তাপমাত্রায় প্যাংগং হ্রদ জমে বরফ হয়ে গিয়েছে। তার উত্তর ও দক্ষিণ পাড়ে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সেনা প্রত্যাহার করতে শুরু করেছে চীন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২০০-র বেশি ভারী ট্যাঙ্ক এবং বেশ কিছু হাউৎজার কামান সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে দুই কিলোমিটার দূরে। সেনা সূত্রে খবর, অন্তত ১০০টি ট্রাক এবং সাঁজোয়া গাড়িও সরিয়ে নিয়েছে লালফৌজ। প্যাংগং হ্রদ লাগোয়া আট নম্বর ফিঙ্গার পয়েন্টের কাছে শ্রীজাপ সেক্টরে সরানো হয়েছে চীনের সব ট্যাঙ্ক, হাউৎজার কামান। পরিস্থিতির উপর প্রতি মুহূর্তে কড়া নজর রাখছে ভারতীয় সেনার উপরমহল। সেই মতো পদক্ষেপ ও কৌশল বদলাচ্ছেন তারাও।

ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর, বুধবার সকাল নয়টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার মধ্যে পিপলস লিবারেশন আর্মি তাদের বিপুল সংখ্যক সেনা, শয়ে শয়ে ট্যাঙ্ক ও, সাঁজোয়া গাড়ি, হাউৎজার সরিয়ে নিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এক শীর্ষ আমলা একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘যতটা ঝড়ের বেগে ওরা সেনা সরিয়েছে ততটা ঝড়ের বেগেই ওরা ফিরে আসতে পারে। তাই আমাদের চূড়ান্ত সতর্ক ও প্রস্তুত থাকতে হবে। এটা একটা মিলিটারি আর্ট। এই আর্টটা লালফৌজ ভালই জানে। তাই আমরাও আমাদের মতো করে কৌশল সাজাচ্ছি।’

গালওয়ান মডেল অনুসরণ করে দক্ষিণ প্যাংগং থেকে সেনা অপসারণ করছে চীন। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, সেনা সর্বাধিনায়ক জেনারেল বিপিন রাওয়াত এবং সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নারভানে। দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা হওয়ার পরে যখন সেনা অপসারণ চলছে, সেখানে প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সেনা সর্বাধিনায়কের নজরদারিতেই স্পষ্ট যে, তাদের জন্য বিষয়টি কতটা আতঙ্কজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, টিওআই।

সর্বশেষ সংবাদ

ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম কাজ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা: ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, জানুয়ারি মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার প্রথম কাজ হবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা।...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ