গাজীপুরে কালিয়াকৈরে সুদের টাকা আদায় করতে মা-মেয়েকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের সিরাজপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকালে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা হলেন- সিরাজপুরের মৃত আব্দুর রশিদের স্ত্রী মমতাজ বেগম ও তার মেয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী মাহবুবা আক্তার ঝুমা। মমতাজ বেগমের অভিযোগ, আমাদের বাঁচাতে আমার ছোট বোন ৯৯৯-এ কল দিলেও পুলিশ আসেনি।
ভুক্তভোগী পরিবার, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দরিদ্র মমতাজ বেগম স্থানীয় গফুর ড্রাইভার ও মনির হোসেনসহ বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে সুদে টাকা নেন। কিন্তু দুই মাস কাটতে না কাটতেই তারা সুদের টাকা আদায়ে নানা হুমকি-ধামকি দিতে থাকে। এনিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় ইউপি সদস্য ইব্রাহীম সিকদার মধ্যস্থতা করে টাকা পরিশোধে এক মাসের সময় বেঁধে দেন। কিন্তু সেই সময় শেষ হওয়ার আগেই বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে মমতাজ বেগমের বাড়ি ঘেরাও করে গফুর ড্রাইভার, তার স্ত্রী কুলসুম বেগম, ছেলে রিপন হোসেন এবং মনির হোসেন ও তার স্ত্রী শিল্পী বেগম, মেয়ে মুক্তা আক্তার, ছেলে শহিদ হোসেন ও স্থানীয় নয়ন হোসেন।
একপর্যায়ে মমতাজ বেগমকে ধরে এনে গাছে বেঁধে মারধর করে তারা। এ সময় মেয়ে ঝুমা মাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাকেও একই গাছে বেঁধে রাখা হয়। এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গেলে মমতাজের ছোট বোন মেহেরিন সুলতানা নুরমিনকেও তারা গাছে বাঁধার চেষ্টা করে। তিনি কোনো রকমে পালিয়ে এসে ৯৯৯-এ ফোন করেন। কিন্তু পুলিশ তাদের বাঁচাতে আসেনি। এমনকি স্থানীয় ফুলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই জামাল উদ্দিনকে জানালেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। পরে তিনি ইউপি সদস্য ইব্রাহীমকে ফোন করলে তিনি এসে তাদের উদ্ধার করেন।
প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়ার পর বিকালে মমতাজ বেগম বাদী হয়ে আট জনের বিরুদ্ধে কালিয়াকৈর থানায় অভিযোগ দেন।
অভিযুক্ত গফুর ড্রাইভার বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগটি মিথ্যা। আমি বিষয়টি জানিও না। অপর অভিযুক্ত মনির হোসেনের মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ করেন তার মেয়ে মুক্তা। তিনি বলেন, মমতাজ বেগমরাই আমাদের মারধর করেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইব্রাহীম সিকদার বলেন, খবর পেয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি মা-মেয়েকে গাছের সাথে বেঁধে মারধর করছে। পরে তাদের উদ্ধার করেছি। ঘটনাটি দুঃখজনক।
ফুলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের এসআই জামাল উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় ৯৯৯-এ থেকে ফোন এলে স্থানীয় মেম্বারকে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে কালিয়াকৈর থানার ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।