চতুর্থ ধাপে দেশের ৫৮ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। এর মধ্যে ৩১টি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট হবে। ইভিএম’এ ভোটগ্রহণ নিয়ে বিশেষ পরিপত্র জারি করেছে ইসি।
বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে ইসি’র যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান বলেন, ‘চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের কর্মকর্তারা সরেজমিন উপস্থিত থেকে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের সব প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা দেবে।’
এস এম আসাদুজ্জামান জানান, ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট চলবে। এর মধ্যে ৩১ পৌরসভায় ভোট হবে ইভিএমে, বাকিগুলোয় ব্যালটে।
৩ জানুয়ারি চতুর্থ ধাপে ৫৬টি পৌরসভার নির্বাচনের তফসিল দেয় ইসি। পরে এ ধাপে আরও দুটি পৌরসভা যুক্ত করায় মোট ৫৮ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হবে এদিন।
চতুর্থ ধাপে যে ৫৮ পৌরসভায় ভোট: ঠাকুরগাঁও সদর ও রানীশংকৈল, লালমনিরহাট সদর ও পাটগ্রাম, জয়পুরহাটের আক্কেলপুর ও কালাই, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, রাজশাহীর নওহাটা, গোদাগাড়ী, তানোর ও তাহেরপুর, নাটোর সদর ও বড়াইগ্রাম, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর ও আলমডাঙ্গা, যশোরের চৌগাছা ও বাঘারপাড়া, বাগেরহাট সদর, সাতক্ষীরা সদর, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, বরিশালের মুলাদী ও বানারীপাড়া, টাঙ্গাইলের গোপালপুর ও কালিহাতী, জামালপুরের মেলান্দহ, শেরপুর সদর ও শ্রীবরদী, ময়মনসিংহের ত্রিশাল ও ফুলপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর, হোসেনপুর ও করিমগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জের মীরকাদিম, নরসিংদী সদর ও মাধবদী, রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দ, ফরিদপুরের নগরকান্দা, মাদারীপুরের কালকিনি, শরীয়তপুরের ডামুড্যা, সিলেটের কানাইঘাট, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, কুমিল্লার হোমনা ও দাউদকান্দি, চাঁদপুরের কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ, ফেনীর পরশুরাম, নোয়াখালীর চাটখিল, লক্ষ্মীপুরের রামগতি, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, চন্দনাইশ ও পটিয়া, খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা, রাঙামাটি সদও, বান্দরবান সদর ও নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি।
যে ৩১ পৌরসভায় ইভিএমে ভোট: ঠাকুরগাঁও, রাজশাহীর গোদাগাড়ী, লালমনিরহাট, নরসিংদীর মাধবদী, রাজবাড়ী, বরিশালের মুলাদী, শেরপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, বাগেরহাট, বান্দরবান, সাতক্ষীরা, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট, কুমিল্লার হোমনা এবং দাউদকান্দি, চট্টগ্রামের পটিয়া, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর, টাঙ্গাইলের গোপালপুর, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা, ফেনীর পরশুরাম, চাঁদপুরের কচুয়া, মাদারীপুরের কালকিনি, নেত্রকোনা, যশোরের চৌগাছা, রাঙ্গামাটি, মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম, ময়মনসিংহের ফুলপুর, জয়পুরহাটের আক্কেলপুর, নোয়াখালীর চাটখিল এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি।
উল্লেখ্য, দেশে পৌরসভা রয়েছে ৩২৯টি। প্রথম ধাপের তফসিলের ২৪টি পৌরসভায় ইভিএমে ভোট হয় ২৮ ডিসেম্বর। ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপের ৬১ পৌরসভায় ভোট হয়েছে। আর তৃতীয় ধাপে ৬৪টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হয় ৩০ জানুয়ারি।
ইভিএম ব্যবহারে ইসি’র বিশেষ পরিপত্রে বলা হয়েছে, ইভিএম ব্যবহার যেহেতু একটি কারিগরি বিষয় এবং নতুন ধরনের ব্যবহার কার্যকারিতা রয়েছে। এজন্য সব প্রার্থী তাদের নির্বাচনী এজেন্ট পোলিং এজেন্ট এবং ভোটারদের মধ্যে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদের সুবিধার্থে ইভিএম ব্যবহার পদ্ধতি বিষয়ক একটি নির্দেশিকার প্রয়োজনীয় সংখ্যক ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ: নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট থেকে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা অর্থাৎ প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদের জন্য দুই দিনব্যাপী এবং পোলিং অফিসারদের জন্য ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহারের বিষয়ে এক দিনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মক ভোটিং: নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়ে সকল সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার উপস্থিত থেকে নির্বাচন সম্পন্ন করবেন। মক ভোটিং শেষে সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসার গণভোটে এ ব্যবহৃত ইভিএমগুলো সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে বুঝিয়ে দেবেন। অফিসাররা ভোটগ্রহণের দিন ভোটগ্রহণের জন্য ব্যবহৃত ইভিএম এবং অন্যান্য আনুষাঙ্গিক অফিসারের নির্দেশনা অনুসারে প্রতিস্থাপন করতে হবে।
অতিরিক্ত অডিট ও পোলিং কার্ডের ব্যবহার: সুষ্ঠুভাবে সিটি নির্বাচন সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে কেন্দ্রে ব্যবহৃত অডিট কার্ড ও পোলিং কার্ডের একটি সামগ্রিক বেকাপ রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে সংরক্ষিত রাখবেন।
ইভিএম যাচাই করা: ভোটগ্রহণের আগের দিন অর্থাৎ ২৬ জানুয়ারি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নামের বিপরীতে ব্যালট ইউনিটে সঠিকভাবে প্রতীক সন্নিবেশিত আছে কি না তা ভোটকেন্দ্রে পৌঁছে প্রিজাইডিং অফিসার যাচাই করবেন।
ডেমো ভোটগ্রহণ: ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার আগে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নির্বাচনী এজেন্ট ও পোলিং এজেন্টকে ভোটগ্রহণ প্রদর্শন করতে হবে। ডেমো ভোটগ্রহণের প্রাক্কালে ইভিএমগুলো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নাম ও প্রতীক সঠিক আছে কিনা তা যাচাই-বাছাই করতে হবে।