নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির বিরুদ্ধে আলজাজিরা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা এমন সময় অপপ্রচার চালাচ্ছে যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের দ্বারপ্রান্তে এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করছে। এসব অপপ্রচার করা হচ্ছে-দেশের সামগ্রিক অগ্রগতি, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন কর্মসূচিকে ব্যর্থ করার জন্য। বিএনপি আলজাজিরার এসব অপপ্রচারকে যেভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে-সেটি রাজনৈতিক ভাষা নয়। আলজাজিরা লাদেনের সাক্ষাত নিয়ে গণমাধ্যমে ব্যবসা করেছে। একুশে আগস্টে গ্রেনেড হামলাকারি, জঙ্গিগোষ্ঠি, বাংলা ভাই, শায়খ আব্দুর রহমান, দুর্নীতিবাজ তারেক রহমান এবং খালেদা জিয়ার সাথে আলজাজিরার সম্পর্ক থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। আলজাজিরার অপপ্রচার নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ বিচলিত নয়, প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বিচলিত নন।
প্রতিমন্ত্রী আজ জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত ‘বাংলাদেশের উন্নয়নঃ গণমাধ্যম ও ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ঢাকা সাংবাদিক ফোরাম (ডিএসএফ) এর সভাপতি শামীম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ডেইলী অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ডিএসএফ-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল জলিল ভূইয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ এবং সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, ডিএসএফ-এর সহ-সভাপতি হালিমা আক্তার লাবণ্য এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ রানা।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপনের দ্বারপ্রান্তে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করছি। সে হিসাবে আমরা গর্বিত নাগরিক। বাংলাদেশ এখন সক্ষমতার জায়গায় চলে গেছে। আগে দেশের বাজেট বাস্তবায়নে বিদেশিদের ওপর নির্ভর করতে হতো। এখন বাজেটের ৯৮ ভাগ নিজস্ব অর্থায়নে করার সক্ষমতা হয়েছে। এক কিলোমিটার রাস্তা, একটি কালভার্ট করতে বিদেশিদের কাছ থেকে ধার নিতে হত। এখন আমরা সড়ক, মহাসড়ক, ছয়লেনের রাস্তা করছি। ভবিষ্যতে ১০ লেনের রাস্তা করা হবে। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করছি। পদ্মা সেতু শুধু সেতু নয়: এটি আমাদের গর্ব এবং এটি আমাদের অহংকার। মহান মুক্তিযুদ্ধের পর এটি আমাদের অন্যতম বিজয়। এসব উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণে। জাতি ও রাষ্ট্র হিসাবে তিনি আমাদের সম্মানিত করেছেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির সাফল্য তুলে ধরতে গণমাধ্যমের বিরাট ভূমিকা রাখছে। তবে সরকারের সাফল্যকে আড়াল করার জন্য আরেকটি গ্রুপ নেতিবাচক ভূমিকা রাখছে। আলজাজিরা একটি গুজব বানোয়াট কাহিনী বানিয়ে ছেড়ে দিল। আমরা একটা গর্বের জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। সেটাকে ব্যর্থ করার জন্য এসব বানোয়াট কাহিনী বানিয়েছে। এসব কাজে মদদ দিচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধি গোষ্ঠি। পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রতিটি পিলার নির্মাণের নিউজ হয়েছে। এটি নিয়েও অপপ্রচার হয়েছে। অনেকে বলেছে- পদ্মা সেতুতে চড়বেন না, এটি জোড়াতালি দেয়া।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর কথা যাতে উচ্চারিত না হয় সেজন্য জিয়া বিভিন্ন পন্থা গ্রহণ করেছিল। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রাজনৈতিক প্রশ্রয়, স্বাধীনতা বিরোধিদের মন্ত্রী বানানো হয়েছে। এরশাদ, খালেদা জিয়াও একই পন্থা করেছে; কিন্তু তারা সেটি পারেনি। জিয়া মুক্তিযুদ্ধকে কলংকিত করেছে; মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) মুক্তিযুদ্ধকে কলংকিতকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করায় তিনি জামুকাকে ধন্যবাদ জানান।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে অনেক উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। পদ্মা সেতু, পায়রা বন্দর, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর, ছয় লেনের রাস্তা নির্মিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরো উন্নয়ন হবে। বাংলাদেশ উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করব।