স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষের আনুষ্ঠানে যোগ দিতে আগামী মার্চ-২০২১ ঢাকায় আসছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ। ঢাকা সফররত পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুল্লাহ শহীদের সঙ্গে বৈঠক করে এই কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহ শহীদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে এ বিষয় জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে মোমেন।
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে অতিথি ভবনের সবুজ লনে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় ড. মোমেন সাংবাদিকদের জানান, ‘মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনায় একমত হয়েছি আমরা।’ মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রতিবেশী দেশের প্রেসিডেন্টের ঢাকা সফরকে তিনি সৌভাগ্যের বিষয় হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার টিকা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মালদ্বীপ বাংলাদেশ থেকে কিছু নার্স নিতে চেয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক চিকিৎসক সেখানে কাজ শুরু করেছেন। একটি বড় সুখবর হলো, দেশটির প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিয়েছেন যে, মালদ্বীপে কাজ করা তাদের দেশের সব শ্রমিক, প্রবাসীসহ সবাইকে বিনামূল্যে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।’ এ জন্য মালদ্বীপ সরকারকে ধন্যবাদ জানান ড. মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ, যোগাযোগ, পর্যটন, জলবায়ু ও রোহিঙ্গা ইস্যুসহ আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বক্তব্যের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহ শহীদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সব ধরনের অবদানকে সাধুবাদ জানায় তার দেশ। করোনা মহামারির সময়ে বাংলাদেশ তার দেশের পাশে দাঁড়ানোয় কৃতজ্ঞতা জানান দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগ ও বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মালদ্বীপের এই মন্ত্রী আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থাকবে মালদ্বীপ। তিনি জানান, রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে একমত। আন্তর্জাতিক আদালতে এই সংক্রান্ত মামলা করা দেশ গাম্বিয়াকে মালদ্বীপের পক্ষ থেকে পূর্ণ সমর্থন দেয়ার কথাও জানান আব্দুল্লাহ শহীদ।
তিনি আরও জানান, মালদ্বীপে কর্মরত অবৈধ শ্রমিকদের বৈধ করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। জানা গেছে, এই বৈঠকে দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক এবং মানবসম্পদ প্রেরণ সংক্রান্ত বিষয়ে আলাদা আরও একটি সমঝোতায় সই করেছে ঢাকা-মালে। এই বৈঠকের সময়, দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ঢাকায় মালদ্বীপ দূতাবাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।