ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর এখনও শিক্ষা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। শুক্রবার ইস্তাম্বুলের হযরত আলী মসজিদে জুমার নামাজ শেষে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি লিবিয়া থেকে তুর্কি সামরিক বাহিনী প্রত্যাহারের জন্য আঙ্কারার প্রতি আহ্বান জানান ম্যাক্রোঁ। তার ওই আহ্বানের জবাবে শুক্রবার এমন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এরদোয়ান।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, লিবিয়ায় শাদ বা মালির মতো সাবেক ফরাসি উপনিবেশগুলো থেকে আসা ভাড়াটে যোদ্ধারা রয়েছে। ম্যাক্রোঁর প্রথমে সেদিকে তাকানো উচিত।
২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকেই সহিংসতা আর বিভক্তিতে জর্জরিত হয়ে আছে লিবিয়া। গত প্রায় ছয় বছর ধরে দেশটিতে সক্রিয় রয়েছে দুটি সরকার। এর মধ্যে রাজধানী ত্রিপোলি থেকে পরিচালিত সরকারকে সমর্থন দিয়েছে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় অংশ। তুরস্কের সমর্থনও এই সরকারের প্রতি। আর দেশটির পূর্বাঞ্চল থেকে পরিচালিত জেনারেল খলিফা হাফতারের নেতৃত্বাধীন অপর সরকারটিকে সমর্থন দিচ্ছে ফ্রান্স, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান ও সৌদি আরবের মতো দেশগুলো। রাজধানী ত্রিপোলির দখল নিতে গত বছরের এপ্রিল থেকে অভিযান জোরালো করে হাফতার বাহিনী। এক পর্যায়ে ত্রিপোলীর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের সহায়তায় তুরস্ক এগিয়ে এলে পিছু হটে হাফতার বাহিনী।
ফ্রান্সে মহানবী (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের ঘটনায় গত বছরও এরদোয়ানের আক্রমণের নিশানায় পরিণত হয়েছিলেন ম্যাক্রোঁ। ওই ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিলে ফরাসি প্রেসিডেন্টকে মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছিলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।
আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যকার যুদ্ধেও পরস্পরবিরোধী অবস্থান নেয় তুরস্ক ও ফ্রান্স। ফ্রান্স আর্মেনিয়াকে সমর্থন দিলেও আঙ্কারার সহায়তায় আর্মেনিয়াকে পরাস্ত করে আজারবাইজান। মুক্ত কারাবাখে উড়ানো হয় তুর্কি ও আজেরি পতাকা। তুর্কি-ফ্রান্স সম্পর্কের এমন রসায়নের মধ্যেই তুর্কি বাহিনীকে লিবিয়া ছাড়ার তাগিদ দেন ম্যাক্রোঁ। আর তার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ফের ম্যাক্রোঁকে একহাত নিলেন এরদোয়ান। সূত্র: ডেইলি সাবাহ।