দক্ষিণ আফ্রিকার জোহান্সবার্গে কৃষ্ণাঙ্গ সন্ত্রাসীদের গুলিতে মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন (৩৮) নামের নোয়াখালীর এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়েছেন লিটনের বড় ভাই মনির হোসেন (৪০)। আশংকাজনক অবস্থায় মনিরকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময় বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে জোহানেসবার্গে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জাহাঙ্গীর আলম লিটন নোয়াখালীর কবিরহাট পৌরসভার ফতেজঙ্গপুর গ্রামের আলমগীর ড্রাইভার বাড়ীর মৃত সামছুল হকের ছেলে। তিনি দুই মেয়ের জনক।
নিহতের বড় ভাই মো. আলমগীর হোসেন জানান, চার ভাইয়ের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম লিটন ছিল তৃতীয়। নিজেদের বাবা-মা’কে হারিয়েছেন অনেক আগে। ১৩-১৪ বছর সৌদি আরবে থাকার পর মেজ ভাই মনির হোসেনের সহযোগিতায় গত ১৮মাস আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় যায় লিটন। পরে মনিরের সাথে জোহানেসবার্গে ব্যবসা চালু করে লিটন। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। প্রতিদিন তার স্ত্রী সারমিন আক্তার, দুই মেয়েসহ পরিবারের সবার সাথে কথা হতো লিটনের। বুধবার রাতে কাজ শেষে নিজ প্রতিষ্ঠানে ঘুমিয়ে ছিল লিটন। পরে সেই দেশে থাকা এক ভাগিনা দোকান বন্ধ করার জন্য লিটনকে ডেকে তুলে। এরকিছুক্ষণ পর পাশে থাকা বড় ভাই মনিরের সাথে দেখা করে আসবে বলে ভাগিনাকে বলে বের হয়ে যায় লিটন।
তিনি আরও জানান, মনিরের দোকানের ভিতরে গিয়ে দুই ভাই কথা বলছিল। এসময় ৪-৫জন সেই দেশি কৃষ্ণাঙ্গ সন্ত্রাসী দোকানে এসে মনিরের ওপর হামলা চালায়। এসময় দুই ভাই তাদের প্রতিরোধ করার জন্য সন্ত্রাসীদের সাথে ধস্তাধস্তি শুরু করে। এর একপর্যায়ে মনিরের মাথায় বন্দুক দিয়ে আঘাত করলে মনির রত্তাক্ত অবস্থায় দৌঁড়ে পালিয়ে গেলেও সন্ত্রাসীদের হাতে আটক হয়ে যায় লিটন। পরে সন্ত্রাসীরা দোকানের সামনের রাস্তায় নিয়ে লিটনের বুকে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
এদিকে লিটনের অকাল মৃত্যুতে এলাকায় ও পরিবারে চলছে শোকের মাতম। স্বামীকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন স্ত্রী সারমিন আক্তার, চোখ দিয়ে পানি যাচ্ছে ২ ও ১ বছরের দুই অবুঝ শিশু কন্যার। জাহাঙ্গীর আলম লিটনের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন তার পরিবার।