ভারতে বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারে সরকারের পক্ষ থেকে সাড়া না পেয়ে এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মা হীরাবেন মোদীর শরণাপন্ন হয়েছেন পাঞ্জাবের এক কৃষক। তাকে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন তিনি। সেখানে কৃষকদের দুঃখ-কষ্টের কথা উল্লেখ করে অনুরোধ জানিয়েছেন, হীরাবেন যেন কৃষি আইন প্রত্যাহার করার জন্য ছেলেকে বোঝান। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ভারতের কৃষকদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে বারংবার কেন্দ্রের আরোপিত তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হলেও কোনো সুরাহা মেলেনি। প্রায় দু’মাস ধরে দিল্লির প্রবল ঠাণ্ডার মাঝেই আইন প্রত্যাহারের দাবিতে পথে অবস্থান করছেন দেশটির বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকরা।
কেন্দ্রের সঙ্গে ১১ বার বৈঠক হলেও সেখানে আইন প্রত্যাহার নয়, স্থগিত রাখার প্রস্তাবই দেওয়া হয়েছে। এমন অবস্থায় এবার প্রধানমন্ত্রীর মায়ের দ্বারস্থ হলেন আন্দোলনকারী কৃষক।
হীরাবেন মোদীকে চিঠিটি লিখেছেন পাঞ্জাবের ফিরোজপুর জেলার বাসিন্দা হরপ্রীত সিং। তাতে নিজেদের দুঃখ দুর্দশার কথাই তুলে ধরেছেন তিনি। একই সঙ্গে অনুরোধ করেছেন, হীরাবেন যেন নিজের ছেলেকে আইন প্রত্যাহারের কথাটি বুঝিয়ে বলেন। চিঠিতে হরপ্রীত সিং লেখেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আপনাকে এই চিঠিটি লিখছি। আপনি নিশ্চয়ই জানেন, যারা সমগ্র দেশের খাবার সংস্থান করেন, সেই অন্নদাতারাই প্রবল শীতের মধ্যেও দিল্লির সড়কে শুতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষি আইনের কারণে। এদের মধ্যে ৯০-৯৫ বছরের বৃদ্ধরা যেমন রয়েছেন, তেমনই শিশু ও নারীরাও রয়েছেন। প্রবল ঠাণ্ডায় তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, কয়েকজন মারাও গিয়েছেন। আমাদের সকলের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই বিষয়টি।
তিনি দাবি করেন, আম্বানি, আদানিসহ কয়েকজন কর্পোরেটের স্বার্থসিদ্ধির জন্য পাস করা এই তিনটি কৃষি আইনের কারণেই দিল্লি সীমান্তে শান্তিপূর্ণভাবে এই আন্দোলন করা হচ্ছে।
চিঠির শেষে হরপ্রীত লেখেন, আমি অনেক আশা নিয়ে আপনাকে এই চিঠিটি লিখছি। আপনার ছেলে নরেন্দ্র মোদী আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি যে কৃষি আইনটি পাস করেছেন, তা প্রত্যাহার করার ক্ষমতাও রয়েছে তার। আমি মনে করি, সকলের অনুরোধ খারিজ করলেও কেউ নিজের মায়ের অনুরোধ ফেলতে পারেন না। একমাত্র মা-ই তার সন্তানকে আদেশ দিতে পারেন। আপনি যদি প্রধানমন্ত্রীকে এই নির্দেশ দেন, তবে গোটা দেশ আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে।
চিঠির লেখক হরপ্রীত সিং নিজেও গত দেড় মাস ধরে দিল্লি সীমান্তে আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন করছেন। কদিন আগে সিমলায় বিনা অনুমতিতে আন্দোলন করার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়, যদিও কিছুক্ষণ পরেই তাকে জামিনে মুক্তিও দেওয়া হয়।