উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হলে আগামী প্রজন্মকে উদ্যোক্তা হওয়ার যোগত্যা অর্জন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, মানুষ তার স্বপ্নের সমান। তাই ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হলে সফল উদ্যোক্তা সৃষ্টির কোন বিকল্প নেই।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) ‘ইন্টারপ্রেনারশিপ এন্ড ইনোভেশন’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ওয়েবিনারটি আশোজন করে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, এখন আমরা আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর পালন করতে যাচ্ছি, বঙ্গবন্ধুর ডাকে আমরা অনেক ত্যাগ তিথিক্ষার পরে আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছিলাম। এই ৫০ বছরে আমারা বিশ্বের বুকে অগ্রসর জাতি হিসাবে দাঁড়াতে পেরেছি। বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিক অগ্রগতির দেশ, এই করোনা আবহে যেখানে বিশ্বে বড় বড় দেশের অর্থনৈতিক চাকা থমকে গেছে সেখানে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা চলমান রয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাহসী দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে।
তিনি বলেন, গত ১০ বছরে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন হয়েছে তা তার পূর্বের ৪০ বছরের থেকেও বেশি। আর এটা সূচনা হয়েছিল ২০০৯ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের ধারনার মাধ্যমে, তখন অবিশ্বস্য হলেও এখন তা বাস্তব। সেই সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আরো কিছু লক্ষ্য স্থির করেছেন তাহলো আমরা ২০২৫ সালে মধ্যম মধ্য আয়ের দেশে, ২০৩১ সালে উচ্চ মধ্য আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালে উন্নতদেশের পরিণত হওয়ার আশা, আর সেই পরিকল্পনা নিয়েই এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ।
আমাদের এখন মাথা পিছু আয় ২০০০ ডলারের কিছু বেশি হলেও উন্নত বাংলাদেশ গড়তে আমাদের মাথাপিছু আয় ১২৫০০ ডলার হতে হবে, ইটস এ বিগ চ্যাজেঞ্জ। তাই আমাদের এখন থেকেই ভাবতে হবে, আমাদের প্রযুক্তি নির্ভর হতে হবে, আগামী প্রজন্মকে সাহসী দক্ষ এবং প্রযুক্তি নির্ভর করে গড়ে তুলতে হবে। উদ্যোক্তা এবং ইনোভেশনের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে, দক্ষ উদ্যোক্তা তৈরি না করতে পারলে উন্নত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে না। ২০৩৫ সালে আমাদের কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা হবে ১২ কোটি ৫৮ লক্ষ যা মোট জনসংখ্যার ৭০%, আমাদের এর সুযোগটা নিতে হবে। এখন ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের যুগ, সবকিছু এখন প্রযুক্তি নির্ভর, তাই আমাদের ও প্রযুক্তি নির্ভর হবে, সময়ের সাথে তথ্য প্রযুক্তি কে ব্যাবহার না করতে পারলে টিকে থাকা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, আগামী বাংলাদেশের কথা মাথায় রেখেই বিডা উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশ ব্যাপী উদ্যোক্তা সৃষ্টি করে চলছে , ইতোমধ্য এ প্রকল্পের মাধ্যমে বিডা ২১০০০ জন কে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে, এর মধ্যে ৩০০৭ জন উদ্যোক্তা হিসাবে তাঁদের কর্মজীবন শুরু করেছে যার ফলে ৩০০০০ এর অধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ব্যাবসা সজহীকরন থেকে শুরু করে বিনিয়োগ বান্ধব বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বিডা। এ সময়ে তিনি ওয়েবিনারে সংযুক্ত শীক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ও আশা প্রকাশ করেন আগামী উদ্যোক্তাদের সাথেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) ইঞ্জিনিয়ার ড. হুমায়ূন কবির।
তিনি বলেন, আগামী প্রজন্মকে ব্রান্ড বাংলাদেশ নিয়ে ভাবতে হবে, নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি, পর্যাপ্ত বিনিয়োগ ছাড়া কাংখিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। এসময়ে তিনি আরো বলেন ইনোভেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ম্যানুফ্যাকচারিং হাবে পরিণত করতে হবে, শিক্ষার্থীদের এই ধারণা নিয়েই এগোনো উচিত।
মিসেস কাহকাশার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম ও ভারপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. ইফফত জাহান।