প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমর্থক এক ব্যবসায়ী হোয়াইট হাউসে তার সাথে দেখা করতে যাওয়ার সময় কি সামরিক শাসন জারির প্রস্তাব নিয়ে যাচ্ছিলেন?
ওয়াশিংটন পোস্টের একজন স্টাফ ফটোগ্রাফার এই ব্যবসায়ীর হাতে ধরা কাগজপত্রের যে ছবি তুলেছেন, সেটি দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় সেরকম আলোচনাই চলছে।
সব বড় বড় মার্কিন সংবাদপত্রে আজ এই খবরটি বেশ ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে দেখা করতে যাওয়া এই ব্যবসায়ীর নাম মাইকেল লিন্ডেল। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ‘মাই পিলো’ বলে একটি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী। এটি মূলত বিছানা এবং বালিশ বিক্রির একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারি, মাইকেল লিন্ডেল হোয়াইট হাউসে যান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাৎ করতে। তিনি যখন ওয়েস্ট উইংয়ের দিকে যাচ্ছেন তখন তার ছবি ধরা পড়ে ওয়াশিংটন পোস্টের স্টাফ ফটোগ্রাফার জ্যাবিন বটসফোর্ডের ক্যামেরায়।
ছবিতে লিন্ডেলের হাতে ধরা কাগজপত্রে যেসব কথাবার্তা লেখা, তার পাঠ উদ্ধার করে অনেকে আঁৎকে উঠেছেন। টুইটারে অনেকে এমন মন্তব্য করেছেন, লিন্ডেলের হাতে ধরা নোট পড়ে মনে হচ্ছে তিনি যেন যুক্তরাষ্ট্রে সামরিক শাসন জারির প্রস্তাব করতে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্ষমতা শেষ হয়ে যাচ্ছে চার দিন পরেই, তার জায়গায় ২০ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন জো বাইডেন।
ট্রাম্প এখনো সমানে দাবি করে যাচ্ছেন, তিনিই নির্বাচনে জিতেছেন এবং কারচুপির মাধ্যমে জো বাইডেনকে জয়ী দেখানো হচ্ছে।
গত ৬ জানুয়ারি তার ডাকে যে হাজার হাজার সমর্থক ওয়াশিংটন ডিসিতে এক সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন, সেখান থেকে ক্যাপিটল ভবনে সহিংস হামলার পর ট্রাম্প এখন বেশ বেকায়দায় আছেন। তাকে এরই মধ্যে কংগ্রেস দ্বিতীয়বারের মতো ইমপিচ (অভিশংসন) করেছে।
ছবিতে ধরা পড়া নোটে যা লেখা:
মাইকেল লিন্ডেল হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একজন কট্টর সমর্থক। গত শুক্রবারও তিনি তার ফেসবুক পাতায় পোস্ট দিয়েছেন : ‘সবাই বিশ্বাস রাখুন! আমরা আরো চার বছর ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আমাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পাবো।’
ওয়াশিংটন পোস্টের ফটোগ্রাফারের তোলা ছবিতে তার হাতে ধরা নোটের যেসব লেখা পড়া যাচ্ছে তার একটি হচ্ছে ‘মার্শাল ল ইফ নেসেসারি’ (প্রয়োজনে সামরিক শাসন)। আরেক জায়গায় লেখা ‘মুভ ক্যাশ প্যাটেল টু সিআইএ একটিং’ (ক্যাশ প্যাটেলকে সিআইএর ভারপ্রাপ্ত..)।
ক্যাশ প্যাটেল হচ্ছেন ট্রাম্পের বিশ্বস্ত একজন কর্মকর্তা, যাকে নির্বাচনের পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। সেখানে তিনি জো বাইডেনের টিমের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের কাজে বাধা সৃষ্টি করছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নির্বাচনে পরাজিত হলে সেক্ষেত্রে সামরিক শাসন জারির পক্ষে মত দিয়েছিলেন এর আগেও কোনো কোনো সমর্থক। এদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন রজার স্টোন।
সিএনএনের হোয়াইট হাউস সংবাদদাতা জিম একোস্টা জানিয়েছেন, তিনি লিন্ডেলের সাথে কথা বলেছেন। লিন্ডেল নিশ্চিত করেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং এসব কাগজপত্র ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে তার স্টাফদের কাছে জমা দিতে বলেন। তবে তিনি তার নোটে ‘মার্শাল ল’ লেখা ছিল বলে যে দাবি করা হচ্ছে, তা অস্বীকার করেন।
সূত্র : বিবিসি