প্রতিদিন ঘুমাচ্ছেন। মাঝে মাঝে ঘুরতে যাচ্ছেন। এসব করে যারা ভাবেন শরীর পর্যাপ্ত বিশ্রাম পাচ্ছে, তাদের জন্য এই লেখা। ফিজিশিয়ান সৌন্দ্র ডালটন-স্মিথ এমডি টেড-টকে বিশ্রামের ৭টি প্রকারের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, বিশ্রামসমূহ প্রত্যেক মানুষের প্রয়োজন।
১. শারীরিক বিশ্রাম: প্রথমত শারীরিক বিশ্রাম আমাদের বেশী প্রয়োজন । এটি নিষ্ক্রিয় হতে পারে, আবার সক্রিয় হতে পারে। নিষ্ক্রিয় হচ্ছে ঘুম। সক্রিয় বিশ্রামের মধ্যে ইয়োগা, ম্যাসেজ থেরাপি রয়েছে। এই বিশ্রামে শরীরের সঞ্চালন প্রক্রিয়া বাড়ার পাশাপাশি নমনীয়তা ঠিক থাকে।
২. মানসিক বিশ্রাম: কিছু মানুষ আছেন যারা সকালে বিশাল এক কাপ কফি দিয়ে দিন শুরু করেন। সারাদিন সব ভুলে যান, কাজে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন। এরা রাতে ঘুমালেও বিশ্রাম পান না। ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমালেও ব্রেইনকে শান্ত করতে পারেন না। এই বিপদ থেকে মুক্তি পেতে অফিসে কাজের ফাঁকে ফাঁকে অল্প করে আপনাকে বিশ্রাম নিতে হবে। প্রতি ২ ঘণ্টা অন্তর ছোট ব্রেক নিন। শান্ত থাকুন। আলাদা বসে থাকুন। দেখবেন শরীর সতেজ হচ্ছে।
৩. সংবেদনশীল বিশ্রাম : উজ্জ্বল আলো, কম্পিউটার, শোরগোল থেকে আপনাকে দিনের কিছুটা সময় ছুটি নিতে হবে। কম্পিউটারে টানা কাজ করতে থাকলে শরীরের সেন্সরে সমস্যা হয়। চোখ, মস্তিষ্ক অস্থির হয়ে পড়ে। এই বিশ্রামের জন্য দিনের মধ্যভাগে চোখ বন্ধ করে অন্তত মিনিট খানেক গা এলিয়ে দিতে হবে। ইচ্ছা করেই কম্পিউটার, ফোন থেকে দূরে থাকতে হবে।
৪. ক্রিয়েটিভ রেস্ট : যারা নতুন আইডিয়া খুঁজে বেড়ান, তাদের জন্য এই বিশ্রাম সবচেয়ে বেশি জরুরি। সৃজনশীল বিশ্রাম আমাদের ভেতরের শক্তিকে জাগিয়ে তোলে। কবে প্রথম ঝরনা দেখেছেন মনে করতে পারেন? কবে প্রথম পাহাড়ি পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে পাখির গান শুনেছেন মনে আছে? যদি না থাকে তবে আপনার ক্রিয়েটিভ বিশ্রাম দরকার।
কাজকে ছুটি দিয়ে চলে যান প্রকৃতির কাছে। দূরে কোথাও যেতে না পারলে আপনার বাড়ির পাশের ওই পার্কটাতে যান না, তাতেও কাজ হবে। ক্রিয়েটিভ রেস্টের আরও কিছু ভাগ আছে। অফিসে নিজের বসার জায়গাটা এমন করা উচিত, যেখান থেকে একটু প্রকৃতি দেখা যায়, সবুজে চোখ রাখা যায়। তাতে আপনা-আপনি অনেকটা বিশ্রাম হয়ে যাবে।
৫. ইমোশনাল রেস্ট : এর আরেক নাম আবেগ নিয়ন্ত্রণ। যারা এ ধরনের বিশ্রাম নিয়ে থাকেন তাদের কথা শুনলেই বোঝা যায়। কেমন আছেন-তিনি ভালো না থাকলে এই প্রশ্নের উত্তরে অবশ্যই বলবেন, ঠিকঠাক যাচ্ছে না‘ এরপর সমস্যার কথা তুলে ধরবেন।
৬. সামাজিক বিশ্রাম : আবেগের বিশ্রামের সঙ্গে সামাজিকতার যোগসূত্র আছে। বিচ্ছেদ, আর্থিক টানা পোড়েনের দিনগুলোতে আবেগের বিশ্রাম প্রয়োজন। এ জন্য ধৈর্য অনুশীলন করা খুব জরুরি। বিশ্বাস করতে শিখতে হয়,‘ধৈর্য ধরলে সুফল আসে।’ সামাজিক বিশ্রামের জন্য ইতিবাচক মানুষের কাছাকাছি থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। যারা আপনাকে সমর্থন করেন, এই বিশ্রামের জন্য তাদের কাছেই থাকুন। সেটা ভার্চুয়ালিও হতে পারে।
৭. আধ্যাত্মিক বিশ্রাম : এই বিশ্রাম শরীরের সঙ্গে মনের সংযোগ ঘটায়। এ জন্য ধর্ম অনুযায়ী প্রতিনিয়ত সবার প্রার্থনা করা প্রয়োজন। প্রয়োজনে ধ্যান করতে পারেন। নিজের কমিউনিটির মানুষের সঙ্গে ধর্মীয় কাজ করতে পারেন।