ইরান ২০ শতাংশ পর্যন্ত বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজ শুরু করতে চায় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের পরমাণু নজরদারি সংস্থা। সংস্থাটি বলেছে, এটি এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক পরমাণু চুক্তির সবচেয়ে বড় লঙ্ঘন।
শনিবার (২ জানুয়ারি) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি পারমাণবিক বোমা তৈরি করার জন্য শতকরা ৯০ ভাগের বেশি মাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন। সে হিসেবে ইরানের কাছে এখনও সেই পরিমাণ ইউরেনিয়াম নেই। ইতোপূর্বে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার দেশকে এই চুক্তি থেকে সরিয়ে নিয়ে পুনরায় নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেন। এরপর থেকেই ইরান এই চুক্তি লঙ্ঘন শুরু করে।
তবে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া এবং চীন সবাই আশা করে যুক্তরাষ্ট্র আগের অবস্থানে ফিরে আসবে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইরান ২০ শতাংশ পর্যন্ত বিশুদ্ধ পরমাণু সমৃদ্ধকরণের বিষয়ে তাদের পরিকল্পনার কথা ফোর্ডো ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্লান্টকে জানিয়েছে। সংস্থাটি আরও বলছে, সংস্থাকে যে চিঠিটি ইরান দিয়েছে, সেখানে এই সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম কখন হবে তা বলা হয়নি।
তার আগে ২০১৯ সালের পরমাণু চুক্তিতে শর্ত ছিল ইরান ৩.৬৭ শতাংশের বেশি বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না। কিন্তু সেই শর্ত তারা লঙ্ঘন করেছে। তবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা তখন থেকেই ৪.৫ শতাংশ পর্যন্ত স্থির রয়েছে। তবে দেশটির শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিযাদে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় গত মাসে ইরানের পার্লামেন্ট পরমাণু সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ২০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা নিয়ে একটি আইন পাস করে। সেই বিলটিতে বলা হয়েছে, ইরানের তেল ও আর্থিক খাতের উপর নিষেধাজ্ঞাগুলো দুই মাসের মধ্যে সহজতর না করলে ইরানের সরকার বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজ আবারও শুরু করবে।
উল্লেখ্য, ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড গ্যাস সেন্ট্রিফিউজে ঢুকিয়ে, পরমাণু ফিশনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত আইসোটপটি আলাদা করে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করা হয়। এটি ইউ-২৩৫ নামে পরিচিত। বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোয় এই স্বল্প-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম, জ্বালানি উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে।