জাতীয় প্রতিরক্ষা আরও জোরদার করতে ‘হোল অব সোসাইটি’ নামে নতুন কৌশলের অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্য কিশোর ও তরুণদের জন্য সশস্ত্র বাহিনীতে বেতনভিত্তিক ‘গ্যাপ ইয়ার’ কর্মসূচি চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে।
বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তরুণদের মধ্যে সামরিক পেশার প্রতি আগ্রহ বাড়ানো এবং নিয়োগ বৃদ্ধি করাই এই উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য।
গতকাল শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) লন্ডনভিত্তিক পত্রিকা দ্য আই পেপার জানিয়েছে, ইউরোপজুড়ে রাশিয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বাড়ায় ব্রিটিশ তরুণদের কাছে সামরিক ক্যারিয়ারের আকর্ষণ বাড়াতে এই কর্মসূচি চালু করতে চায় দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
ব্রিটিশ রেডিও স্টেশন এলবিসির তথ্য মতে, প্রাথমিকভাবে ২০২৬ সালের শুরুতে ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী প্রায় ১৫০ জন তরুণ এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। চাহিদা বাড়লে ভবিষ্যতে বছরে এক হাজারের বেশি তরুণকে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য সরকারের।
যুক্তরাজ্যের প্রস্তাবিত কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া তরুণদের সক্রিয় সামরিক অভিযানে পাঠানো হবে না। যদিও বেতনের অঙ্ক এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নির্ধারিত হয়নি, এলবিসি জানিয়েছে—এটি প্রাথমিক পর্যায়ের সেনা নিয়োগপ্রাপ্তদের বেতনের সমান হতে পারে, যা সাধারণত বছরে প্রায় ২৬ হাজার পাউন্ড (প্রায় ৩৫ হাজার মার্কিন ডলার)।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া তরুণদের দুই বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হবে, যার মধ্যে প্রথম ১৩ সপ্তাহ থাকবে মৌলিক প্রশিক্ষণ। নৌবাহিনীর ক্ষেত্রে কর্মসূচির মেয়াদ হবে এক বছর। রয়্যাল এয়ার ফোর্স (আরএএফ) এখনো তাদের কর্মসূচির চূড়ান্ত কাঠামো নির্ধারণ করছে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি দ্য আই পেপারকে বলেন, এটি প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে একটি নতুন যুগ। আর এর মানে হলো তরুণদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করা।
নাইটন বলেন, যুক্তরাজ্যের ওপর সরাসরি রাশিয়ার হামলার সম্ভাবনা কম হলেও ‘হাইব্রিড হুমকি’ দ্রুত বাড়ছে। তিনি যুক্তরাজ্যের উপকূলের কাছে সমুদ্রতলের কেবল ম্যাপিংয়ের সন্দেহে একটি রুশ গুপ্তচর জাহাজের সাম্প্রতিক ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, “প্রতিদিনই যুক্তরাজ্য রাশিয়ার সাইবার হামলার মুখে পড়ছে। আমরা জানি, রুশ এজেন্টরা নাশকতার চেষ্টা করছে এবং আমাদের ভূখণ্ডেই মানুষ হত্যার ঘটনাও ঘটিয়েছে।
তিনি সতর্ক করে জানান, রাশিয়ার সামরিক শক্তি এখন দ্রুত বাড়তে থাকা একটি ‘হার্ড পাওয়ার’-এ পরিণত হয়েছে।
এর আগে চলতি বছর যুক্তরাজ্য সরকার ঘোষণা দেয়, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশটির প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে ব্যয় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে।
সূত্র: আল-জাজিরা

