spot_img

ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে টানাপোড়েনের প্রধান কারণ ভারতের ‘বড় ভাইসুলভ ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ’

অবশ্যই পরুন

বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েন নতুন মোড় নিয়েছে। সম্প্রতি ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ড, বাংলাদেশি কূটনৈতিক মিশনে হামলা ও উভয় দেশের হাইকমিশনারকে পাল্টাপাল্টি তলব— সব মিলিয়ে দুই দেশের মধ্যে অবিশ্বাস ও উত্তেজনা বাড়ছে। পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের সম্পাদকীয় বলছে, দিল্লির ‘বড় ভাইসুলভ ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণই’ সমস্যার প্রধান কারণ; দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি চাইলে সবাইকে একে অন্যের সার্বভৌমত্ব মেনে চলতে হবে।

সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক এখন মারাত্মক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে প্রখ্যাত ছাত্রনেতা শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের পর। তার সমর্থকরা দাবি করছেন, ভারত ইন্ধনেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। পরে চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে দিল্লিতে একদল হিন্দুত্ববাদী উগ্রপন্থি বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলার চেষ্টা করে। ভারতের আরও কয়েকটি শহরে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনের ওপর হামলার খবরও পাওয়া গেছে।

ভারতের উগ্র সংগঠনগুলো, বিশেষ করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ময়মনসিংহে এক হিন্দু ব্যক্তিকে গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনার অজুহাতে ভারতের ভেতরে বাংলাদেশের মিশনগুলোর ওপর হামলা চালাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে কূটনৈতিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। পাল্টা পদক্ষেপে দিল্লিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধি‌কেও তলব করা হয়েছে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের শীর্ষ কূটনীতিককে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ঘটনাগুলোকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা করছে, বিশেষ করে বাংলাদেশি মিশনগুলোতে উগ্র জনতার হামলার ঘটনাগুলোকে।

শেখ হাসিনা ওয়াজেদের শাসনামলে ঢাকা–দিল্লি প্রায় একই সুরে কথা বলেছে। তবে গত বছর তার সরকার পতনের পর এবং হাসিনা দিল্লিতে পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশে তীব্র ভারতবিরোধী মনোভাব দেখা দিয়েছে। অনেকেই মনে করেন, দীর্ঘসময় ধরে দিল্লিই শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনকে সমর্থন দিয়ে এসেছিল।

গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেয়ায় সেই ধারণা আরও জোরালো হয়েছে। তার সঙ্গে শরিফ ওসমান হাদির সন্দেহভাজন হত্যাকারী ভারতেই পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ যোগ হয়েছে।

দু’দেশের তথা বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে টানাপোড়েনের বড় কারণটি সম্ভবত প্রতিবেশীদের প্রতি ভারতের ‘বড় ভাইসুলভ ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ আচরণ। দিল্লির উচিত, হাদির হত্যাকারীদের খুঁজে বের করতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করা; একই সঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানো থেকে বিরত থাকা উচিত ভারতের।

দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও সৌহার্দ্য টিকিয়ে রাখতে হলে সবার সার্বভৌমত্বকে সম্মান জানাতেই হবে। কোনও দেশই যেন আঞ্চলিক ‘প্রভু’ হয়ে অন্যদের ভয়-ভীতি দেখাতে না পারে— এটাই সবচেয়ে জরুরি।

সর্বশেষ সংবাদ

ওসমান হাদি হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলো সিবিউন-সঞ্জয়

ইনকিলাব মঞ্চের নেতা শরীফ ওসমান হাদি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম জিজ্ঞাসাবাদে ‘গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর’...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ