spot_img

ভারতকে এমন শিক্ষা দিয়েছি , যা কখনো ভুলবে না: শেহবাজ শরিফ

অবশ্যই পরুন

চলতি বছরের মে মাসে পাকিস্তান-ভারত সংঘাত নিয়ে ফের কড়া বক্তব্য দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। তিনি বলেছেন, ওই সংঘাতে মোদি নেতৃত্বাধীন ভারত সরকারকে উচিত শিক্ষা দিয়েছে পাকিস্তান। খাইবার পাখতুনখাওয়ার হারিপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এই কথা বলেন। তার ভাষায়, ‘পাকিস্তান-ভারত সংঘাতে আমরা মোদি সরকারকে এমন এক শিক্ষা দিয়েছি, যা তারা কোনোদিন ভুলতে পারবে না’। খবর জিও নিউজ

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কা-ই-হক’ বা ‘সত্যের যুদ্ধে’ পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী জাতির দোয়া ও অটল সমর্থনের মাধ্যমে বিজয় অর্জন করেছে। তিনি বলেন, ‘দিল্লি থেকে মুম্বাই— পুরো ভারতই এই পরাজয় কখনো ভুলবে না’। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মে মাসে পাকিস্তান ও ভারত যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। সেসময় জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার পর উত্তেজনা দেখা দেয় এবং এরই একপর্যায়ে পাকিস্তানের ওপর আক্রমণ চালায় ভারত।

নয়াদিল্লির দাবি, ওই হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানি নাগরিক। তবে ইসলামাবাদ এ অভিযোগ অস্বীকার করে এবং নিরপেক্ষ তদন্তে অংশ নেয়ার আহ্বান জানায়। তবে ভারত সেই পথে না হেঁটে সরাসরি পাকিস্তানে হামলা চালায়। ৮৭ ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘাতে ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করে পাকিস্তান, যার মধ্যে তিনটি ছিল অত্যাধুনিক রাফাল ফাইটার জেট। এ ছাড়া বহু ড্রোনও ভূপাতিত করা হয়। পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই দেশের মধ্যে এই যুদ্ধ ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে শেষ হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ খাইবার পাখতুনখাওয়াকে সাহসী, দৃঢ়চেতা ও বীর মানুষের প্রদেশ হিসেবে উল্লেখ করেন, যারা কয়েক দশক ধরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছেন। খাইবার পাখতুনখাওয়ার জনগণের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের ত্যাগের কারণেই দেশে শান্তি ফিরে এসেছে’।

অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের প্রসঙ্গ টেনে পাকিস্তানের এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাদুবিদ্যা’ নয়, বরং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই পাকিস্তান দেউলিয়া হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে। তিনি জানান, অর্থনীতি সংকটময় অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে স্থিতিশীলতার পথে রয়েছে এবং এখন এটিকে এগিয়ে নেয়ার প্রয়োজন। জাতীয় অগ্রগতির ভিত্তি হিসেবে ঐক্যের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘চারটি প্রদেশই যখন উন্নয়ন করবে, তখনই দেশ এগোবে’।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে এক হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারত তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও পাকিস্তান তা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে। এরপর ২৩ এপ্রিল ভারত একের পর এক বৈরী পদক্ষেপ নেয়। যার মধ্যে ৬৫ বছরের পুরোনো সিন্ধু নদ পানি চুক্তি (আইডব্লিউটি) স্থগিত করে, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে, ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দেয়, নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশন বন্ধের নির্দেশ দেয় এবং উভয় দেশের দূতাবাসে কর্মী সংখ্যা কমিয়ে আনে।

এরপর ৭ মে ভোরে পাঞ্জাব ও আজাদ জম্মু ও কাশ্মিরের ছয়টি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়, যাতে একটি মসজিদ ধ্বংস হয় এবং নারী-শিশুসহ বহু বেসামরিক মানুষ নিহত হন। এর জবাবে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী দ্রুত পাল্টা অভিযান চালিয়ে ভারতীয় ৬টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে, যার মধ্যে তিনটি রাফাল ফাইটার জেট ছিল বলে দাবি করা হয়। এরপর ১০ মে ভোরে ভারত পাকিস্তানের কয়েকটি বিমান ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুস’ শুরু করে। এতে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ কেন্দ্র, বিমান ঘাঁটি ও অন্যান্য কৌশলগত স্থাপনায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়।

পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, সারারাতের তীব্র কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পর উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আলাদাভাবে এ চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এরপর গত অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, গত মে মাসে পাকিস্তান ও ভারতের মাঝে আকস্মিক সামরিক সংঘাতের সময় একেবারে নতুন সাতটি বিমান ধ্বংস হয়েছিল। তার হস্তক্ষেপের ফলে সেই সংঘাত থেমে যায় বলেও সেসময় দাবি করেন তিনি। জাপানের রাজধানী টোকিওতে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে এক নৈশভোজে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ট্রাম্প এসময় বলেন, ‌‌একেবারে নতুন এবং সুন্দর সাতটি বিমান ভূপাতিত হয়েছিল। এই দাবি কয়েকবার পুনরাবৃত্তি করে তিনি বলেন, ‘সাতটি বিমান ধ্বংস হয়েছিল, সাতটি একেবারে নতুন, সুন্দর বিমান ধ্বংস হয়েছিল।’

অবশ্য পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতে নয়াদিল্লি ‘কিছু ক্ষয়ক্ষতি’ হয়েছে বলে স্বীকার করলেও ছয়টি যুদ্ধবিমান হারানোর দাবি অস্বীকার করে। এমনকি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও সংখ্যাও প্রকাশ করেনি নয়াদিল্লি।

সর্বশেষ সংবাদ

ওসমান হাদির মৃত্যুতে শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের অকুতোভয় যোদ্ধা ও ‘ইনকিলাব মঞ্চ’-এর মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি মারা গেছেন। তার মৃত্যুতে আগামী শনিবার রাষ্ট্রীয়...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ