গাজা উপত্যকায় প্রায় দুই মাস ধরে চলমান যুদ্ধবিরতি তখনই সম্পূর্ণ হবে, যখন ইসরায়েলি সেনারা পুরোপুরি ওই এলাকা থেকে সরে যাবে—এমন মন্তব্য করেছেন মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি।
আজ শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দোহা ফোরামে তিনি এসব কথা বলেন। খবর আল আরাবিয়ার।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এখন আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আছি… ইসরায়েলি বাহিনীর পূর্ণ প্রত্যাহার এবং গাজায় স্থিতিশীলতা ফিরে না এলে যুদ্ধবিরতি সম্পন্ন হবে না।”
কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের সহযোগিতায় অর্জিত এ যুদ্ধবিরতি ১০ অক্টোবর কার্যকর হয়। এতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে প্রায় দুই বছরের লড়াই কার্যত থেমে গেছে। তবে চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ এখনো শুরু হয়নি। এই ধাপে ইসরায়েলকে তাদের অবস্থান থেকে সরে যেতে হবে, গাজায় একটি অন্তবর্তী প্রশাসন দায়িত্ব নেবে এবং সেখানে মোতায়েন করা হবে একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী—আইএসএফ।
আরব ও মুসলিম দেশগুলো এ স্থিতিশীলতা বাহিনীতে অংশ নিতে দ্বিধান্বিত, কারণ বাহিনীটি প্রয়োজনে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সঙ্গেও সংঘাতে জড়াতে পারে। আলোচনাটি আরও এগিয়ে নিতে শনিবার দোহা ফোরামে বক্তব্য দেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানও। তিনি জানান, বাহিনীর কাঠামো, নেতৃত্ব এবং কোন কোন দেশ এতে অংশ নেবে এসব প্রশ্ন এখনো অমীমাংসিত।
ফিদানের ভাষায়, বাহিনীর প্রথম কাজ হওয়া উচিত ফিলিস্তিনিদের ইসরায়েলিদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা। “এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। এরপর অন্যান্য ইস্যু সমাধানে এগোনো যাবে,” বলেন তিনি।
হামাসের নিরস্ত্রীকরণ প্রশ্নে অচলাবস্থা
তুরস্ক এই বাহিনীতে অংশগ্রহণের আগ্রহ জানালেও ইসরায়েল বিষয়টিকে ভালোভাবে দেখছে না। দেশটি মনে করে, আঙ্কারা হামাসের সঙ্গে অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠ।
ফিদান বলেন, “এই যুদ্ধের সমাপ্তির একমাত্র পথ হলো আন্তরিকভাবে এবং জোরালোভাবে শান্তি আলোচনায় যুক্ত হওয়া।”
পরবর্তী ধাপ নিয়ে আলোচনা চলছে
কাতারের প্রধানমন্ত্রী জানান, যুদ্ধবিরতির প্রধান গ্যারান্টর দেশগুলো—কাতার, তুরস্ক, মিসর এবং যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে বসে পরবর্তী ধাপকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে।
তবে তিনি মনে করেন, এই পরবর্তী ধাপও কেবলই সাময়িক সমাধান। “গত দুই বছরে যা ঘটেছে, শুধু সেটি সমাধান করাই যথেষ্ট নয়,” মন্তব্য করেন তিনি। ভবিষ্যতের জন্য ন্যায়ভিত্তিক দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের ওপর জোর দেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি টেকসই সমাধান চাই, যা দুই পক্ষের জন্যই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।”

