যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক পুলিশের ইতিহাসে (এনওয়াইপিডি) নতুন ইতিহাস তৈরি করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামসুল হক। তিনি প্রথম দক্ষিণ এশীয় হিসেবে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার পদে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা শুধু তাঁর ব্যক্তিগত কৃতিত্ব নয়, বরং দক্ষিণ এশীয় এবং বাংলাদেশি অভিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য এক বিশাল অনুপ্রেরণা।
শামসুল হক বাংলাদেশের সিলেটের গোলাপগঞ্জের বাঘার গ্রামের বাসিন্দা। স্ত্রী রুবিনা হক ও দুই ছেলেকে নিয়ে তিনি বর্তমানে নিউইয়র্কের কুইন্সে বসবাস করছেন।
তিনি ২০২১ সালের ২৯ জানুয়ারি এক অফিসিয়াল অনুষ্ঠানে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার পদে পদোন্নতি পান।
শামসুল হকের যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানো এবং সফল হওয়ার পথ ছিল সংগ্রামের। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে তিনি শুরুতে রেস্তোরাঁয় বাস বয়, ডেলিভারিম্যান, ম্যানেজারসহ বিভিন্ন পদে চাকরি করেছেন। তবে ভালো কিছু করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নিয়ে তিনি পড়াশোনা চালিয়ে যান।
তিনি ১৯৯৭ সালে ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জনের পর লাগার্ডিয়া কলেজ থেকে এএস এবং বারুক কলেজ থেকে বিবিএ ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীতে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি জনপ্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
২০০৪ সালের জানুয়ারিতে এনওয়াইপিডিতে যোগ দেন শামসুল হক। তখন হাতেগোনা কয়েকজন বাংলাদেশি পুলিশ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কর্মজীবনের দক্ষতার কারণে ২০১০ সালে সার্জেন্ট এবং ২০১৪ সালে লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতি পান। পরে তিনি এনওয়াইপিডির অভিজাত অভ্যন্তরীণ বিষয়ক তদন্ত গ্রুপেও যোগদান করেন।
শামসুল হক Bangladeshi American Police Association (BAPA) গঠন করেন, যা বাংলাদেশি-আমেরিকানদের আইন প্রয়োগকারী পেশায় যোগদানে উৎসাহিত করে। তাঁর নেতৃত্বে অনেক বাংলাদেশি-আমেরিকান অফিসার এবং ডিটেকটিভ এনওয়াইপিডিতে নিয়োগ পেয়েছেন।
শামসুল হক এই সাফল্যের পর বলেন, “আমি চাই আরও বাংলাদেশি-আমেরিকান যুবকরা আইন প্রয়োগে অংশগ্রহণ করুক এবং সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করুক।”

