spot_img

শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩৪

অবশ্যই পরুন

ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটোয়া’র প্রভাবে সৃষ্টি হওয়া ভয়াবহ বন্যার পর শ্রীলঙ্কায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ৩৩৪। রাজধানী কলম্বোর বিভিন্ন এলাকায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কর্তৃপক্ষ উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

রোববার (৩০ নভেম্বর) হালনাগাদ তথ্যে দেশটির ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট সেন্টার (ডিএমসি) জানায়, প্রায় ৪০০ মানুষ এখনো নিখোঁজ এবং আগামী কয়েক দিনে দ্বীপজুড়ে আরও ভারী বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে।

ডেইলি মিরর বরাত আল-জাজিরা জানায়, নিখোঁজদের মধ্যে রয়েছেন নৌবাহিনীর পাঁচ সদস্য, যারা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের চালাই লেগুনে একটি নৌ-উপকেন্দ্রে উপচে পড়া পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে গিয়ে নিখোঁজ হন।

চরম প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে প্রায় ১৫ হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া ৪৪ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন সরকারি ত্রাণকেন্দ্রে। এ তথ্যও জানিয়েছে ডিএমসি।

এদিকে, ২৪ হাজারেরও বেশি সেনা, পুলিশ ও বিমানবাহিনীর সদস্য এখনও বন্যায় আটকে পড়া পরিবারগুলোতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।

পূর্ব-মধ্যাঞ্চলের সাম্মানথুরাই থেকে আল-জাজিরার প্রতিবেদক জানান, ঘূর্ণিঝড়ের পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দিতে শ্রীলঙ্কা হিমশিম খাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু পাড়া পুরোপুরি কাদামাটির নিচে চাপা পড়েছে, আর প্রতিটি দৃশ্য আরও হতাশা বাড়াচ্ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে, এখনো এমন অনেক এলাকা আছে যেখান থেকে কোনো আপডেট পাওয়া যায়নি।’

তিনি আরও জানান, নতুন রোপণ করা ধানখেতও টানা বৃষ্টিতে পানির নিচে ডুবে গেছে।

ডিএমসি জানায়, কলম্বোর উত্তরাংশেও বড় ধরনের বন্যা দেখা দিয়েছে। কারণ কেলানি নদীর পানি ক্রমাগত বাড়ছে।

ডিএমসির এক কর্মকর্তা জানান, ‘ঘূর্ণিঝড় কেটে গেলেও উজানে ভারী বর্ষণের কারণে এখন কেলানি নদীর তীরের নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হচ্ছে।’

এদিকে শনিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী এই সংকট মোকাবিলায় জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন এবং আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানান।

ভারত প্রথম সাড়া দিয়ে ত্রাণসামগ্রী ও উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য দুইটি হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে। জাপানও একটি মূল্যায়নকারী দল পাঠানোর পাশাপাশি আরও সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

যদিও দ্বীপজুড়ে বৃষ্টি কমেছে, তবুও সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মধ্য প্রদেশের অনেক সড়ক এখনও অগম্য রয়েছে বলে ডিএমসি জানিয়েছে।

চরম এই আবহাওয়া ২০ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর ধ্বংস করেছে এবং ১ লাখ ২২ হাজার মানুষকে অস্থায়ী আশ্রয়ে যেতে বাধ্য করেছে। আরও ৮ লাখ ৩৩ হাজার মানুষকে সহায়তা প্রয়োজন হয়েছে এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর।

উদ্ধার তৎপরতায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি বেসামরিক সহায়ক ও স্বেচ্ছাসেবকরাও অংশ নিচ্ছেন।

কর্তৃপক্ষ জানায়, দেশের এক-তৃতীয়াংশ এলাকায় বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বন্ধ। কারণ বিদ্যুৎ–লাইন ভেঙে পড়েছে এবং পানি পরিশোধন কেন্দ্রগুলো প্লাবিত হয়েছে। ইন্টারনেট সংযোগও ব্যাপকভাবে ব্যাহত।

২০১৭ সালের পর এই ঘূর্ণিঝড় শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে প্রাণঘাতী প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ওই সময় বন্যা ও ভূমিধসে ২০০–এর বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল। এর আগে, ২০০৩ সালের জুনের পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। তখন প্রায় ২৫৪ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন।

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ