গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় বুধবার (১৯ নভেম্বর) ২৭ জন নিহত হয়েছে। উপত্যকার কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান। ইসরাইল ও হামাস পরস্পরকে ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত করছে।
গাজা সিটি থেকে বার্তাসংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
গত মাসে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে গাজায় এসব হামলা ছিল ফিলিস্তিনি অঞ্চল সবচেয়ে মারাত্মক।
গত মাসে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে গাজায় এই হামলাগুলো সবচেয়ে মারাত্মক ছিল। প্রায় এক বছর ধরে যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরায়েল লেবাননে হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে ধারাবাহিক হামলার ঘোষণা দেওয়ার পর বুধবারের হামলাটি হয়।
এএফপি’র সঙ্গে যোগাযোগ করে দুটি হাসপাতাল ও হামাস কর্তৃপক্ষের অধীনে পরিচালিত ভূখণ্ডের নাগরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানায়, বুধবার উত্তরে গাজা সিটিতে ১৬ জন ও দক্ষিণে খান ইউনিস এলাকায় ১৩ জন নিহত হয়েছে। ।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে ‘যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন’ করে দক্ষিণে সেনাদের তৎপরতা চালানোর একটি এলাকায় হামাস গুলি চালানোর পর তারা হামাসের ওপর পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
তবে হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ও এই হামলাগুলো যুদ্ধবিরতিকে বিপন্ন করতে পারে উল্লেখ করে একে ‘বিপজ্জনক বৃদ্ধি’ আখ্যায়িত করে এর নিন্দা জানিয়েছে। ১০ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও এসব হামলা চলমান রয়েছে।
৫০ বছর বয়সী আহরাফ আবু সুলতান এএফপিকে জানান, তিনি এক বছর ধরে দক্ষিণে বাস্তুচ্যুত থাকার পর রোববার তার পরিবারের সঙ্গে গাজা সিটিতে তার বাড়িতে ফিরে এসেছেন।
গাজায় গণমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও অনেক এলাকায় প্রবেশের অসুবিধার কারণে এএফপি স্বাধীনভাবে উভয় পক্ষের দেওয়া মৃতের সংখ্যা ও বিবরণ যাচাই করতে পারছে না।
বসামরিক প্রতিরক্ষা পরিসংখ্যান ও পাঁচটি গাজা হাসপাতাল থেকে এএফপির প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে দৈনিক সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৯ অক্টোবর। ওইদিন ইসরায়েলি হামলায় সেখানে শতাধিক মানুষ নিহত হয়।
হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি চলাকালীন ইসরায়েল হামাসের লক্ষ্যবস্তু বলে দাবি করা স্থানে বারবার হামলা চালিয়েছে, যার ফলে ২৮০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিন নাগরিক নিহত হয়েছে।
মার্কিন-মধ্যস্থতায় পরিচালিত একটি চুক্তির ওপর ভিত্তি করে এই যুদ্ধবিরতি করা হয়। চুক্তিটিতে হামাসের হাতে আটক শেষ ৪৮ জন জিম্মিকে ইসরায়েলে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
যদিও যুদ্ধবিরতির প্রথম দিকে সমস্ত জীবিত জিম্মিকে হস্তান্তর করা হয়েছিল। তবে মৃতদের ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া ধীর গতিতে চলছে। তিনজন জিম্মির মৃতদেহ এখনও গাজায় রয়ে গেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার দ্বিতীয় পর্যায়ের হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ, একটি অন্তর্বর্তীকালীন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা ও একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীল বাহিনী মোতায়েনের বিষয় বাস্তবায়ন হয়নি।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ সোমবার ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে সমর্থন করে মার্কিন-খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে, যদিও হামাস ফিলিস্তিনিদের ‘রাজনৈতিক ও মানবিক দাবি’ পূরণ করতে ব্যর্থ বলে প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছে।

