আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে গুরুতর অভিযোগ তুললেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি অভিযোগ করেছেন, একটি রাজনৈতিক দল তাদের প্রভাবাধীন বিভিন্ন ব্যাংক ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের পোলিং এজেন্ট হিসেবে নিয়োগের চেষ্টা করছে। পাশাপাশি তিনি বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে ‘স্পাইনলেস’ আখ্যা দিয়ে প্রশাসনিক ভাগাভাগির মাধ্যমে নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের পাঁয়তারার তীব্র সমালোচনা করেন।
হাসনাত শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে দলের ঢাকা জেলা ও দুই মহানগর শাখার সমন্বয় সভায় বক্তৃতাকালে এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দল তাদের নিয়ন্ত্রিত দখল করা ব্যাংক এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের পোলিং এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, এই রাজনৈতিক দলটি স্কুল কমিটিগুলো দখল করেছে, স্কুল কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারিকে প্রভাবিত করেছে এবং শিক্ষকদের জিম্মি করেছে। তাদের উদ্দেশ্য হলো আগামী নির্বাচনে কেন্দ্রগুলো দখল করার জন্য শিক্ষকদের এখনই সশস্ত্র কায়দায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির সমালোচনা করে এই তরুণ নেতা বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এই দুইটা দল নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়ে গিয়েছে।
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের এই মুখ্য সংগঠক মনে করেন, নির্বাচন প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে আরেকটি ‘ইঞ্জিনিয়ার্ড ইলেকশন’ উপহার দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, জাতি ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের মতো বিতর্কিত নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি দেখতে চায় না। কিন্তু বর্তমানে যেভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া চলছে, তাতে আরেকটি ‘ফ্রি ইঞ্জিনিয়ার্ড ইলেকশন’ উপহার পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। হাসনাত বলেন, কমিশন বিতর্কিত নির্বাচনের দিকেই যাচ্ছে। তিনি ইসিকে ‘স্বৈরতান্ত্রিক একটা কমিশনে রূপান্তরিত’ হয়েছে আখ্যা দিয়ে বলেন, ইলেকশন কমিশন একটা স্পাইনলেস কমিশন। এই কমিশনকে গনিমতের মাল হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলো ভাগাভাগি করে নিয়ে গিয়েছে।
একই সঙ্গে তিনি এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করে বলেন, যিনি সম্প্রতি একজন ব্রিগেডিয়ারের কাছে হাত তুলে ক্ষমা চেয়েছিলেন, সেই ব্যক্তি ‘ক্যান্টনমেন্টে বসে বসে ষড়যন্ত্র করছেন কাকে নির্বাচনে জেতাবেন আর কাকে নির্বাচনে হারাবেন।’
তিনি মন্তব্য করেন, দেশের জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে কলঙ্কমুক্ত হওয়ার একটি সুযোগ আসছে।
হাসনাত আরও জানান, নির্বাচন সামনে রেখে বর্তমানে সচিবালয়ে ডিসি, এসপি, ভাগাভাগি চলছে। তবে তার দল একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়ার জন্য সহায়তা করতে প্রস্তুত। তবে এর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্যই ‘প্রশাসনিক ভাগাভাগি বন্ধ করতে হবে’ বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

