spot_img

দাঁড়িয়ে পানাহারের রীতি বর্জনীয়

অবশ্যই পরুন

বিশ্বব্যাপী দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে স্ট্রিট ফুড বা পথ খাবার। সাশ্রয়ী, সুস্বাদু ও সহজলভ্য হওয়ায় অনেকেই এখন এসব খাবারের দিকে ঝুঁকছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় শহরের বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে উঠছে হরেক রকম পথ খাবারের দোকান। এতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যেমন জড়িয়ে পড়েছে, তেমনি সৌখিন ধনীরাও কেউ কেউ তাদের বিলাসবহুল গাড়িকেই দোকান বানিয়ে ফুটপাতে খাবার বিক্রি করছে। ব্যাবসা-বাণিজ্যের প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও সফলতা প্রশংসাযোগ্য। এতে নিঃসন্দেহে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছে, মানুষও সহজে হরেক রকম খাবারের স্বাদ নিতে পারছে।

কিন্তু সমস্যা হলো, কিছু কিছু দোকান এমন আছে, যেগুলোতে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয় না। যা ইসলামী সংস্কৃতির পরিপন্থি। এমনকি খাওয়ার আদবেরও পরিপন্থি। বিশ্বনবী (সা.) তাঁর উম্মতদের দাঁড়িয়ে পানাহার করতে নিষেধ করেছেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.) কোনো লোককে দণ্ডায়মান হয়ে পান করতে বারণ করেছেন। কাতাদাহ বলেন, আমরা বললাম, তবে খাবারের ব্যাপারে (আদেশ কি)? তিনি বলেন, সেটা তো আরো নিকৃষ্ট, আরো জঘন্য।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫১৭০)

দাঁড়িয়ে পানাহারের মাধ্যমে শুধু খাবারের আদব লঙ্ঘন হয় না, বরং এতে মানুষের শারীরিক অনেক ক্ষতি হয়। তাই হয়ত মহানবী (সা.) দাঁড়িয়ে পানাহারকে ভীষণ অপছন্দ করতেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যেন কখনো দাঁড়িয়ে পান না করে। কেউ ভুলে পান করলে সে যেন পরে বমি করে ফেলে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫১৭৪)

দাঁড়িয়ে পান করার অপকারিতা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলেন, এতে বদহজম হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে, জি ই আর ডি-তে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে, অ্যাংজাইটি লেভেল বেড়ে যায়, পানি পান করলেও তষ্টো থেকেই যায়, কিডনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, পাকস্থলীতে ক্ষত সৃষ্টি হয়, অ্যাসিড লেভেলে তারতম্য দেখা দেয়, আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

দাঁড়িয়ে খাবার গ্রহণ করলে তা সরাসরি পাকস্থলীতে চলে যায়। এতে খাবার সঠিকভাবে হজম হয় না ও পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা দেখা দেয়। আর খাদ্যনালি, পাকস্থলীতে কোনো সমস্যা না থাকলেও হতে পারে অ্যাসিডিটির সমস্যা। খাবার ঠিকমতো হজম না হলে এর প্রভাব পুরো শরীরে পড়ে। কারণ বদহজম নানা সমস্যা সৃষ্টি করে। বদহজম হলে গ্যাস, পেট ফঁাপা, খাবার জমাট হয়ে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, বুক জ্বালা ও অবসাদ দেখা দেয়।

সবচেয়ে বিপজ্জনক ব্যাপার হলো, দাঁড়িয়ে পানাহার করলে, সেই খাবারে ইবলিস শয়তান এসে যোগ দেয়। যার যে অত্যন্ত নিকৃষ্ট। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘রসুল (সা.) এক ব্যক্তিকে দাঁড়িয়ে পান করতে দেখে জিজ্ঞেস করেন, তুমি কি পছন্দ কর যে তোমার সঙ্গে বিড়াল একসঙ্গে পান করুক, উত্তর লোকটি বলল না, রাসুল (সা.) বলেন, তোমার সঙ্গে তার চেয়ে নিকৃষ্ট কেউ পান করেছে, আর সে হলো শয়তান। (মুসনদে আহমদ) নাউজুবিল্লাহ, তাই আমাদের উচিত দাঁড়িয়ে পানাহার করা থেকে বিরত থাকা। শুধুমাত্র জমজমের পানির বিধান ভিন্ন। কারণ কোনো বিজ্ঞ আলেমের মতে জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করা মুস্তাহাব। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ (সা.)-কে জমজম থেকে পানি পান করিয়েছি। তিনি দাঁড়িয়ে তা পান করেছেন। (মুসলিম, হাদিস : ৫১৭৫)

সর্বশেষ সংবাদ

ভোট ডাকাতির চেষ্টা হলে প্রতিহত করতে হবে: জামায়াত আমির

জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শক্তভাবে ভোটকেন্দ্রের পাহাড়ায় থাকতে হবে। কেউ ভোট ডাকাতি করতে আসলে তাদেরকে প্রতিহত...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ