গাজার দক্ষিণাঞ্চলে অস্থায়ী তাঁবুতে দিন কাটানো হাজারো বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা বলছেন, তারা এক অসহায়, অমানবিক অবস্থায় আটকে পড়েছেন। খাদ্য, পানি ও ন্যূনতম জীবনের সুযোগ-সুবিধা ছাড়া তারা কেবল আশায় বুক বেঁধে আছেন, হয়তো কোনো এক যুদ্ধবিরতির চুক্তি তাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া নিজেদের বাসভূমিতে।
নাদা নামের এক নারী, তার স্বামী খাদ্যের খোঁজে গিয়ে নিহত হন। এখন তার দুই মেয়েকে নিয়ে প্লাস্টিক ও কাঁথা দিয়ে তৈরি একটি অস্থায়ী তাঁবুতে বসবাস করছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না কোথায় যাব, কী করব। আমি আমার সন্তানদের নিয়ে একা, পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। খাবার নেই, পানি নেই, কাপড় নেই। আমরা শুধু দোয়া করি যেন একটি চুক্তি হয় এবং আমরা যেন সবার আগে উত্তর গাজায় ফিরতে পারি—যদিও আমার ঘর ধ্বংস হয়ে গেছে।’
আরেক বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি নারী আতাফ জানান, যুদ্ধের প্রথম দিকেই তার ঘর ধ্বংস হয়ে যায়।
তার ভাষায়, ‘আমি যতটুকু সম্ভব নিজ বাড়িতে থাকতে চেষ্টা করেছি, কিন্তু চারদিকে যখন ক্ষেপণাস্ত্র আর গোলার বিস্ফোরণ হচ্ছিল, তখন আর থাকা সম্ভব হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হেঁটে দক্ষিণে পাড়ি দিই—আমার সন্তান ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে। কিন্তু আমার দুই ছেলে সেই পথ পেরোতে পারেনি। আমি প্রতিদিন প্রার্থনা করি এই দুঃস্বপ্ন যেন শেষ হয়, এবং আমি যেন আমার সেই পাড়া–মহল্লায় ফিরতে পারি, যেখানে আমি জন্মেছি, বড় হয়েছি। এটা কোনো জীবন না।’
গাজার বাস্তুচ্যুত মানুষদের এই করুণ বাস্তবতা প্রতিদিন আরও কঠিন হয়ে উঠছে—নিরাপদ আশ্রয়, খাবার, ওষুধ ও মানবিক সহায়তার চরম সংকট তাদের জীবনকে করে তুলেছে অমানবিক। তারা এখন শুধু অপেক্ষায়, যুদ্ধ থামবে, চুক্তি হবে। আর তারা ফিরতে পারবে নিজ ভূমিতে।
সূত্র: আল-জাজিরা