জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্রান্ডি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আগে সোমবার সংস্থার সদর দপ্তরে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
উভয় নেতাই সংকটের মূল বিষয়গুলো নিয়ে গভীর আলোচনা করেন। এর মধ্যে ছিল মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ক্রমশ অবনতিশীল মানবিক পরিস্থিতি, বাংলাদেশের কক্সবাজারে এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গার ওপর প্রভাব ফেলে এমন আন্তর্জাতিক সহায়তা হ্রাস এবং রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, গত ১৮ মাসে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, যা ইতোমধ্যেই ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে এবং আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়িয়েছে।
তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে রোহিঙ্গা বিষয়ে মঙ্গলবার অনুষ্ঠেয় ঐতিহাসিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনটি একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করবে। উল্লেখ্য, কেবল রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে এ ধরনের সম্মেলন এবারই প্রথমবারের মতো আয়োজিত হচ্ছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এ সম্মেলন বিশেষ করে বর্তমানে বাংলাদেশে আশ্রিত এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গার জন্য জরুরি তহবিল সংগ্রহে আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাতে সহায়ক হবে।
গ্রান্ডি গত মাসে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক সম্মেলনের প্রশংসা করেন, যেখানে প্রথমবার রোহিঙ্গা নেতারা চারদিনব্যাপী আলোচনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি বাংলাদেশকে বিশেষ করে বৈশ্বিক শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে সংকটের টেকসই সমাধান অর্জনের লক্ষ্যে কূটনৈতিক কার্যক্রম আরও জোরদার করার আহ্বান জানান।
বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান ইউএনএইচসিআর প্রধানকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের চলমান শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত করেন।
তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গার যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হয়েছে।’