সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর জন্য তার আইনজীবী আদালতে ড্রাই ফ্রুটস, ডায়েট কোক ও স্যান্ডউইচের ব্যবস্থা করার অনুমতি চাইলেও আদালত সেই আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমান এই আদেশ দেন।
সকালে প্রায় ৯টার দিকে আমুকে আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। এরপর সাড়ে ৯টার দিকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, পেছনে হাতকড়া ও হেলমেট পরিয়ে তাকে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের দ্বিতীয় তলায় ২৮ নম্বর আদালতে হাজির করা হয়। কাঠগড়ায় ওঠানোর পর তার নিরাপত্তা সরঞ্জাম খুলে নেওয়া হয় এবং বয়স ও শারীরিক অবস্থার কারণে তাকে বসার জন্য একটি টুল দেওয়া হয়।
এদিন যাত্রাবাড়ীতে শ্রমিক মো. রিয়াজ (৩৫) নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলায় আমুকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিটিটিসির এসআই শাখাওয়াত হোসেন।
শুনানিকালে আমুর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহসিন রেজা আদালতে বলেন, “আমু সাহেব অসুস্থ। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে আধা ঘণ্টা পর পর অল্প অল্প খাবার খাওয়াতে হয়। তিনি স্যান্ডউইচ, পানি, ডায়েট কোক খেতে পছন্দ করেন। এসব খাওয়ানোর অনুমতি চাই।”
জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউশন ইন্সপেক্টর মো. জাহিদ বলেন, “খাবারের টেস্টিং ইস্যু আছে।” এরপর আদালত আবেদনটি নামঞ্জুর করেন।
আদালত থেকে বের হয়ে আমুর আইনজীবী বলেন, “আমু সাহেব একজন বয়স্ক, অসুস্থ মানুষ। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী, তাকে নিয়মিত খাবার খাওয়াতে হয়। আজ সাতজনের খাবার নিয়েছিলাম—সাতটি ডায়েট কোক, স্যান্ডউইচ ও পানি। এর আগেও একাধিকবার আদালত খাবার খাওয়ানোর অনুমতি দিয়েছিলেন, তবে আজ পুলিশি আপত্তির কারণে অনুমতি দেওয়া হয়নি।”
তিনি আরও জানান, “এ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ২৩টি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টিতে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।”
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানার শহীদ ফারুক রোডে আন্দোলনে অংশ নেন শ্রমিক মো. রিয়াজ। সেদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর রিয়াজের স্ত্রী ফারজানা বেগম যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৬ নভেম্বর ধানমন্ডি এলাকা থেকে আমির হোসেন আমুকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এরপর থেকে বিভিন্ন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।