spot_img

টাইফয়েডের টিকা পাবে ৪ কোটি ৯০ লাখ শিশু, দিবে যেদিন থেকে

অবশ্যই পরুন

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বলেছেন, আগামী ১২ অক্টোবর থেকে সারাদেশে ৪ কোটি ৯০ লাখ শিশুকে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হবে।

রোববার মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বাজারে টাইফয়েডের কিছু টিকা রয়েছে। কিন্তু, এই টিকা অনেক উন্নতমানের এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃত।

তিনি বলেন, আগামী ১২ অক্টোবর থেকে পরবর্তী দশ দিন ঢাকাসহ সারাদেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়ের স্কুল কলেজে টিকা দান কার্যক্রম চলবে। পরবর্তীতে পহেলা নভেম্বর থেকে পরবর্তী দশ দিন ইউনিয়ন পর্যায়ে সেন্টারগুলো থেকে টিকা দেয়া হবে।

গত ১ আগস্ট থেকে সারাদেশে স্কুল কলেজগুলোতে এ বিষয়ে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। www.vexepi.gov.bd এই ওয়েবসাইটে জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য দিয়ে শিশুদের রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

যাদের এই রেজিস্ট্রেশন থাকবে টিকাদানে তারা ১২ অক্টোবর থেকে যেকোনো সেন্টারে গিয়ে টিকা দিতে পারবে।

সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সেন্টারগুলোতে শিশুরা টিকা দিতে পারবে। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ করা আছে।

মহাপরিচালক বলেন, টাইফয়েড একটি সংক্রামক রোগ। খাওয়ার আগে এবং মলমূত্রত্যাগের পরে ভালোভাবে হাত ধুলে এই রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে। তবে অন্যান্য কারণে ও এই টাইপের রোগ হতে পারে। তিনি বলেন, টাইফয়েড রোগ একটি ছোঁয়াচে এবং কঠিন রোগ।

মহাপরিচালক বলেন, সারাদেশের নয় মাস বয়স থেকে ১৫ বছর বয়সী সকল শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেয়া হবে।

তিনি বলেন, যাদের জন্ম সনদ নেই তাদেরকেও টিকা দেয়া হবে। তবে সে ক্ষেত্রে তাদের তথ্য বিস্তারিতভাবে সেন্টারগুলো কর্মকর্তাদের কাছে দিতে হবে।

মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশে সংক্রমণজনিত রোগের অন্যতম প্রধান কারণ টাইফয়েড। টাইফয়েড জ্বর ‘স্যালমোনেলা টাইফি’ নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট একটি রোগ। মূলত দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে এই রোগের জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে।

তিনি বলেন, টাইফয়েড প্রতিরোধে টিসিভি (টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন) টিকা কার্যকর ও নিরাপদ।

মহাপরিচালক জানান, বিশ্বব্যাপী এই টিকা বিরূপ প্রতিক্রিয়া ছাড়াই শিশুরা গ্রহণ করছে। পাকিস্তান, নেপাল ও বিভিন্ন দেশে এই টিকা প্রদান করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে ব্যবহৃত টিসিভি টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক যাচাইকৃত। টিসিভি টিকা দেয়ার পর সামান্য প্রতিক্রিয়া, যেমন: টিকা দেয়ার স্থানে চামড়া লাল হওয়া, ফুলে যাওয়া, সামান্য ব্যথা, অল্প জ্বর, মাথা ব্যাথা, ক্লান্তি ভাব এবং মাংসপেশিতে ব্যথা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে; যেগুলি এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।

মহাপরিচালক বলেন, টিকাদান ক্যাম্পেইন চলাকালে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি ও সমমান পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীকে স্ব-স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভূত নয় মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি শিশুদের বিদ্যমান ইপিআই স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে এই টিকা প্রদান করা হবে।

তিনি বলেন, দুই বছর এবং তার কম বয়সি শিশুদের ০.৫ এম.এল, পরিমাণ টিকা উরুর মধ্যভাগের বাইরের অংশের মাংসপেশিতে এবং দুই বছরের অধিক বয়সীদের বাহুর উপরিভাগে বাইরের অংশে সমপরিমাণ ডোজ ডেল্টয়েড মাংসপেশিতে প্রদান করা হয়।

মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশে নয় মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি শিশুরাই টাইফয়েড রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। টিসিভি এক ডোজ টিকা এই বয়সে প্রদান করলে অধিক মাত্রায় রোগ প্রতিরোধ করে। সেজন্য এই ক্যাম্পেইনে নয় মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সের শিশুদের এই টিকা দেয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অ্যাডমিন ও প্লানিং, পরিচালক প্রশাসন ডাক্তার মোহাম্মদ আবু হানিফ, ইপিআই’র লাইন ডিরেক্টর ডাক্তার মো. আব্দুল্লাহ আল মুরাদসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: বাসস।

রেজিস্ট্রেশন করবেন যেভাবে
টাইফয়েডের টিকা নিতে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে নির্ধারিত তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে।

রেজিস্ট্রেশনের জন্য ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে প্রথমে জন্ম তারিখ দিতে হবে। দিন, মাস ও বছরের ঘর পূরণ করতে হবে। এরপর প্রয়োজন হবে ১৭ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন সনদ। জন্ম নিবন্ধন সনদের নম্বরসহ সব তথ্যই ইংরেজিতে লিখতে হবে। যদিও বলা হয়েছে, কারও জন্ম নিবন্ধন সনদ না থাকলে বাবা-মায়ের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেও নিবন্ধন করা যাবে কিন্তু এখনো পর্যন্ত নিবন্ধন করতে গেলে জন্ম নিবন্ধন আবশ্যক দেখাচ্ছে। এ বিষয়টি এখনো সরকার স্পষ্ট করেনি।

>> এরপর নারী না পুরুষ ঘরটি পূরণ করতে হবে। তারপর একটি ক্যাপচা কোড পূরণের মাধ্যমে আবেদনকারীর সব তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে পরের ধাপে যাওয়া যাবে।

>> পরের ধাপে গিয়ে আবেদনকারী মা-বাবার মোবাইল নম্বর, ই-মেইল, পাসপোর্ট নম্বর, বর্তমান ঠিকানার ঘর পূরণ করে ‘সাবমিট’ করতে হবে। ‘সাবমিট’ করার পর মোবাইল ফোনে আসা একটি ‘ওটিপি’ দেওয়ার মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষ হবে।

>> দ্বিতীয় ধাপে টাইফয়েড অথবা মেনিনজাইটিসের মধ্য থেকে একটি বাছাই করতে হবে। টাইফয়েড অংশে ক্লিক করলে দুটি অপশন আসবে- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত নমব শ্রেণি ও সমমান পর্যন্ত সব শিক্ষার্থী অথবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভূত ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সব শিশু।

>> এখান থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অপশনে গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম, পুরো ঠিকানা, কোন শ্রেণিতে অধ্যয়নরত তা পূরণ করতে হবে। থানা, ওয়ার্ড নম্বর, জোনও পূরণ করতে হবে। এরপর সাবমিট করলে টিকাদান কেন্দ্রের তথ্য আসবে। যে স্কুলে শিক্ষার্থী টিকা নিতে চায়, সেটা সিলেক্ট করতে হবে।

আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভূত অপশনে গেলেও নিকটস্থ টিকাদান কেন্দ্র বাছাই করে নিতে হবে। এরপর ‘সাবমিট’ করতে হবে। সাবমিট করার পর ভ্যাকসিন কার্ড আসবে। সেখানে ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড করতে হবে। এ কার্ড প্রিন্ট করে নিয়ে নির্ধারিত দিনে টিকাদান কেন্দ্রে যেতে হবে।

টিকা দেওয়ার পর অনলাইনেই পাওয়া যাবে টাইফয়েড ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট। এটি অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সংগ্রহে রাখতে পারবেন।

ইতোমধ্যেই অনলাইনে নিবন্ধন শুরু হয়েছে। এক ডোজের এই টিকাটি ৩ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত সুরক্ষা দেবে। ভারত থেকে কেনা সব টিকা ইতোমধ্যে দেশে পৌঁছেছে। যারা বিদ্যালয়ে টিকা নিতে পারবে না, তারা পরবর্তীতে ইপিআইয়ের টিকাদান কেন্দ্র থেকে টিকা নিতে পারবে।

সর্বশেষ সংবাদ

‘প্রবীণদের আত্মনির্ভরশীল জীবনের সুযোগ তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’

প্রবীণদের জন্য একটি আত্মনির্ভরশীল ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনের সুযোগ তৈরি করতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ