spot_img

রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা জরুরি: প্রধান উপদেষ্টা

অবশ্যই পরুন

রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (২৫ আগস্ট) কক্সবাজারে রোহিঙ্গাবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. ইউনূস বলেন, ‌‘আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডারস’ ডায়ালগে বক্তব্য রাখতে পেরে আমি আনন্দিত। আপনাদের উপস্থিতি ও অংশগ্রহণের জন্য আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’

তিনি বলেন, ‘আজ অষ্টম ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা স্মরণ দিবসে’ আমি গভীর শোকের সঙ্গে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি ও মিয়ানমার থেকে তাদের বাংলাদেশে আশ্রয়ের দিকে। মাত্র কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে ২০১৭ সালের আগস্টে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আজও তাদের ওপর অমানবিক আক্রমণ ও নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। তাই আজও নতুন নতুন রোহিঙ্গা আমাদের সীমান্তে প্রবেশ করছে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকের এই দিনে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হলো ইতিহাসের সঠিক পাশে দাঁড়ানো এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধনের ভয়ংকর পরিকল্পনা থেকে বিরত করা। শেষ রোহিঙ্গা রাখাইন ছাড়ার অপেক্ষায় থাকলে সেটি হবে ইতিহাসের ভয়াবহ ভুল।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আতঙ্কিত ও ভীতসন্ত্রস্ত চোখ দেখি সেই নারী-পুরুষদের, যারা ভয়ংকর নির্যাতনের গল্প নিয়ে সীমান্তে উপস্থিত হয়। এসব গল্পের মধ্যে রয়েছে— পরিকল্পিত নিপীড়ন, নাগরিকত্ব অস্বীকার, জোরপূর্বক বিতাড়ন, গণহত্যা, ধর্ষণ, অমানবিক নির্যাতন, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া ইত্যাদি। তাই বাংলাদেশ ২০১৭ সালে এবং তারও আগে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সীমান্ত খুলে দিয়েছিল, যাতে তাদের জীবন রক্ষা পায়—যদিও আমাদের সম্পদ ও সামর্থ্যে সীমাবদ্ধতা ছিল। এটি আমাদের মানবিক সহানুভূতির বহিঃপ্রকাশ।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আর নীরব থাকতে পারি না। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই যেন তারা যৌথভাবে মিয়ানমার জান্তা ও আরাকান আর্মিকে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা চালানো থেকে বিরত রাখে। আজ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি জরুরি।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের জন্য দাতা দেশ, আমাদের অংশীদার, জাতিসংঘ সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংগঠন এবং বিশ্বের বন্ধুদের অব্যাহত সহায়তা ও সংহতির জন্য আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। রোহিঙ্গারা যতদিন না স্বদেশে ফিরে যাচ্ছে, ততদিন আপনাদের সহায়তা অপরিহার্য ও গুরুত্বপূর্ণ থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে, যা কক্সবাজারকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে পরিণত করেছে। প্রতি বছর প্রায় ৩২ হাজার নবজাতক জন্ম নিচ্ছে রোহিঙ্গা শিবিরে। অন্যদিকে মিয়ানমারে বর্তমানে মাত্র পাঁচ লাখেরও কম রোহিঙ্গা বসবাস করছে। এটি প্রমাণ করে, নির্যাতন অব্যাহত থাকায় রোহিঙ্গারা এখনো মিয়ানমার ছাড়ছে।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘গত আট বছরে বাংলাদেশের জনগণ, বিশেষ করে কক্সবাজারের স্থানীয়রা, বিরাট ত্যাগ স্বীকার করেছে। আমাদের অর্থনীতি, সম্পদ, পরিবেশ, সমাজ ও শাসন ব্যবস্থার ওপর এর বিরাট প্রভাব পড়েছে। আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই আমাদের জনগণকে এই বিপুল ত্যাগ ও সহায়তার জন্য। কিন্তু অভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে আর কোনো সহায়তা মজুদ করার সুযোগ আমরা দেখছি না।’

সর্বশেষ সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রে মানুষখেকো মাছি শনাক্ত

একধরনের মাংসখেকো পরজীবী মাছি শনাক্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যে। সেখানে এক ব্যক্তির শরীরে ‘নিউ ওয়ার্ল্ড স্ক্রুওয়ার্ম’ নামের এই মাছি...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ